টাইব্রেকারে বায়ার্ন মিউনিখকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে প্রথম বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতে নিয়েছে চেলসি। মিউনিখে অনুষ্ঠিত ফাইনালের নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষে খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত ছিলো।
ঘরের মাঠ অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় শুরু থেকেই চেলসিকে চেপে ধরে বায়ার্ন। কিন্তু বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট হওয়ায় হতাশ হতে হয় জার্মান পরাশক্তিদের।
ম্যাচে বায়ার্নের প্রথম হতাশাজনক মুহূর্ত ১৩ মিনিটের সময়। ফ্র্যাঙ্ক রিবেরির ক্রস থেকে মারিও গোমেজের হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
২১ মিনিটে গোল প্রায় করেই ফেলেছিলেন আরিয়েন রবেন। দুজনকে বোকা বানিয়ে শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় চেলসিকে বিপদমুক্ত করেন গোলরক্ষক পিওতর চেক। বল চেকের হাতে লেগে, ক্রসবার ছুঁয়ে বাইরে চলে যায়।
৩৬ মিনিটের সময় আবার বায়ার্নের জন্য হতাশা। বাঁ দিক থেকে আসা রিবেরির ক্রসে বাঁ পায়ে শট নেন টমাস মুলার। কিন্তু বল সাইড বারের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
তিন মিনিট পর বায়ার্নের আরেকটি পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোমেজের গোলের প্রচেষ্টা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে চেলসি।
৪২ মিনিটে গোমেজের ব্যর্থতা তো রীতিমতো অমার্জনীয়। বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেলেও তিনি মারেন ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে।
তাই প্রথমার্ধটা হতাশা নিয়েই শেষ হয় বায়ার্নের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও একই চিত্র, বায়ার্নের গোল করার মরিয়া প্রচেষ্টা এবং চেলসির কোনোক্রমে রক্ষা পাওয়া।
৫৪ মিনিটে অবশ্য চেলসির জালে বল পাঠিয়েছিলেন রিবেরি। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বৈধতা পায়নি।
৫৯ মিনিটে রবেনের জোরালো নিচু শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন অ্যাশলি কোল।
৫ মিনিট পর বায়ার্নের আরেকটি সুযোগও নষ্ট হয় রবেনের ব্যর্থতায়।
৭৪ মিনিটে অবশ্য বেঁচে যায় বায়ার্ন। বাঁ দিক থেকে আসা সলোমন কালুর ক্রস থেকে দিদিয়ের দ্রগবার শট ঠেকিয়ে দেন বায়ার্নের গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়ের।
এর পরে অবশ্য যথারীতি বায়ার্নেরই প্রাধান্য ছিলো। কিন্তু মুলার-গোমেজদের ব্যর্থতায় কিছুতেই গোলের দেখা পাচ্ছিলো না তারা।
অবশেষে সাফল্য ধরা দেয় ৮৩ মিনিটের সময়। রিবেরির ক্রস থেকে মুলারের হেড মাটিতে ড্রপ খেয়ে, চেককে বোকা বানিয়ে চলে যায় জালে।
তবে ৮৮ মিনিটে সমতা ফিরিয়ে আনে চেলসি। কর্নার থেকে দ্রগবার জোরালো হেড নয়েরের হাতে লেগে বায়ার্নের জালে প্রবেশ করে।
তাই অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই চমক। ৯৩ মিনিটে রিবেরিকে বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়ে দ্রগবা বায়ার্নকে শুধু পেনাল্টিই দেননি, হলুদ কার্ডও দেখেন।
কিন্তু পেনাল্টি থেকে রবেনের শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ধরে ফেলেন চেক।
আর তাতে উজ্জীবিত হয়ে খেলায় প্রথম বারের মতো প্রাধান্য বিস্তার করতে শুরু করে চেলসি। যদিও অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১৫ মিনিটে তারা আর গোলের দেখা পায়নি।
বরং ১০৮ মিনিটে বায়ার্নই গোল পেতে পারতো। রবেনের ক্রস থেকে রিবেরির বদলি হিসেবে নামা ওলিচের শট চলে যায় বাইরে।
এরপর দুদলই চেষ্টা করেছে গোল করার। কিন্তু সে সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় দাঁড়াতে হয় টাইব্রেকারের সামনে।
টাইব্রেকারে চেলসির পক্ষে নেয়া হুয়ান মাতার প্রথম শটটিই ঠেকিয়ে দেন নয়ের।
তবে বায়ার্নের হয়ে চতুর্থ শট নিতে আসা ওলিচের শট ফিরিয়ে দেন চেক। আর শোয়েইনস্টাইগারের নেয়া পঞ্চম ও শেষ শটটি বাধা পায় সাইড বারে।
চেলসির শেষ শটটি করতে আসেন দ্রগবা। ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে সতীর্থদের আনন্দ আলিঙ্গনে ভেসে যান আইভরি কোস্টের তারকা স্ট্রাইকার।