জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং অন্যপ্রকাশের সত্ত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে একটি মামলা হয়েছে।
নজরুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী বুধবার সকালে চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম নিজামুল হকের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী সুপারকে বিষযটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদির আইনজীবী কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বার্তা ৭১ ডটকমকে বলেন, মামলাটি করা হয়েছে ৩০২/১২০বি, ৩০৪ (ক), ৪০৬, ৪২০ ও ৩৪ ধারায়।
“এতে পরিকল্পিতভাবে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে পরস্পরের যোগসাজশে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে”, বলেন তিনি।
বৃহদান্ত্রে ক্যান্সার ধরা পড়ার পর গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য নিউ ইয়র্কে যান হুমায়ূন আহমেদ। সেখানে মেমোরিয়াল স্লোয়ান-কেটরিং ক্যান্সার সেন্টারে তার চিকিৎসা চলে।
অস্ত্রোপচারের পর অবস্থার অবনতি হলে গত মাসে লেখককে ভর্তি করা হয় নিউ ইয়র্কের বেলভ্যু হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৯ জুলাই মারা যান হুমায়ূন আহমেদ।
এই পুরো সময়টায় যুক্তরাষ্ট্রে তার পাশে ছিলেন স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। অন্যপ্রকাশের মাজহারুল ইসলামও নিউ ইয়র্কে হুমায়ূনের চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করেন।
২৩ জুলাই হুমায়ূনের মরদেহ দেশে আনার পরদিন গাজীপুরে লেখকের নিজের হাতে গড়া নুহাশ পল্লীতে তাকে দাফন করা হয়।
বাদি নজরুল ইসলাম তার মামলার আর্জিতে বলেন, ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি ও নগদ টাকা, যা শাওনের কাছে গচ্ছিত ছিল, তা আত্মসাৎ করতে এবং প্রকাশক মাজহারুল ইসলামের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হুমায়ূনের লোক দেখানো চিকিৎসা করানো হয়।
দুই আসামি পরিকল্পিতভাবে পরস্পরের যোগসাজশে লেখককে হত্যা করেছে বলেও বাদি অভিযোগ এনেছেন।
এ মামলায় দৈনিক আমার দেশের বার্তা সম্পাদক, স্থানীয় দৈনিক আজাদীর বার্তা সম্পাদক ও লেখক আবদুল হাই শিকদারকে সাক্ষী করা হয়েছে।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, হুমায়ূন আহমেদের অস্ত্রোপচারের পর গত ১৭ জুলাই চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে তার সেলাই খুলে যায় এবং তিনি প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। প্রথম আসামি শাওন ওইদিন তাকে হাসপাতালে না নিয়ে পরদিন অখ্যাত জামাইক্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবণতি ঘটলে পরে তাকে বেলভ্যু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুই আসামি ওই হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছে এসব তথ্য গোপন করেন বলেও আর্জিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, দুই আসামি হুমায়ূন আহমেদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকলেও তারা চিকিৎসকের ফোন নম্বর রাখার প্রয়োজন বোধ করেননি। বেলভ্যু হাসপাতালে অস্ত্রোপচার চলার সময়ও তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
নজরুল ইসলাম আদালতকে বলেছেন, দৈনিক আজাদী ও দৈনিক আমারদেশ পড়ে তিনি এসব তথ্য জানতে পেরেছেন।