ঢাকা: জামিনে মুক্ত বহুল আলোচিত রাজধানীর শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ডাবল মার্ডার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
রোববার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মোজাম্মেল হোসেন এ আদেশ দেন।
পাঁচটি হত্যাসহ মোট ৯ মামলার আসামি বিকাশ কুমার বিশ্বাস গত ১৪ ডিসেম্বর সকাল সোয়া আটটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর-২ কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি দেয়ার বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। ১৫ বছর ধরে কারাবন্দী ছিলেন তিনি।
বিকাশকে এভাবে মুক্তি দেয়া নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। অভিযোগের আঙুল চলে যায় সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের দিকে। এরপর বিকাশের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, ‘বিকাশের বিরুদ্ধে পুনরায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার সুযোগ নেই। তিনি এরইমধ্যে ১৫ বছর জেল খেটেছেন।’ এছাড়া তিনি বিকাশের মুক্তির বিষয়টি জায়েজ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সংসদীয় কমিটি তার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি।
তেজগাঁও থানার মামলা নম্বর ৫(৪)৯৭ মামলায় গত ১১ ডিসেম্বর প্রডাকশন ওয়ারেন্ট (পিডব্লিউ) প্রত্যাহারের পরই তিনি জামিনে মুক্তি পান। মুক্তির পর গত ৮ জানুয়ারি মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম ধার্য দিন ছিল।
ওই দিন বিকাশ নিরাপত্তাহীনতার জন্য আদালতে হাজির হতে পারেননি বলে তার পক্ষে সময়ের আবেদন করেন আইনজীবী মোসলেম উদ্দিন ভূইয়া।
বিচারক মো. মোজাম্মেল হোসেন শুনানি শেষে পরে আদেশ দেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন। রোববার বিচারক আদেশে বিকাশের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
জনৈক ঠিকাদার গাজী ওবাইদুর রহমান নান্না তার ভাগ্নে মামুনসহ দুই জনকে হত্যার অভিযোগে ১৯৯৭ সালের ২ এপ্রিল রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
ঢাকার শেরেবাংলানগরে পিডব্লিউডি ভবনের উপবিভাগ ৭ এর কার্যালয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ ও ইসহাকসহ ৬ জন ওই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
মামলাটিতে ১৯৯৮ সালের ৭ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার আরমান হোসেন।
এ মামলায় ২০০৮ সালের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ফৌজদারি বিধি মামলা নম্বর ৩৪০১/৯৯ এর রুলের নিষ্পত্তি শেষে বিকাশের জামিন মঞ্জুর করেন।
ওই সময় মামলাটিতে তার জামিন মঞ্জুর করলেও তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা থাকায় তিনি মুক্তি পাননি।
মামলাটিতে ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে।
বিকাশকে ১৯৯৭ সালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আলোচিত সহকারী কমিশনার (এসি) আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার করেছিলেন।