সাভার, ১৩ মে: দ্বিতীয় দিনের মতো রোববারও সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পোশাক শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুর চলছে।
শনিবার সংঘর্ষের সময় পুলিশের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে গাড়িচাপায় এক এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার জের ধরে রোববার সকাল ৯টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং দফায় দফায় সংঘর্ষ।
আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা কামাল জানান, শ্রমিকরা সড়কের মাঝখানে গাছের গুঁড়ি জড়ো করে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় অন্তত ২৫টি গাড়ি ভাংচুর করে তারা।
সকাল ১০টার দিকে সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করলে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ চলছে।
এর আগে শনিবার সকালে আশুলিয়ার নরসিংহপুরে হা-মীম গ্রুপের বাংলাবাজারের নেক্সট কালেকশন কারখানার আহত এক শ্রমিকের মৃত্যুর সংবাদে শ্রমিক ও পুলিশের সঙ্গে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার কারখানার এক কর্মচারীকে কারখানা কর্তৃপক্ষ পিটিয়ে আহত করার পরে গুম করার গুজব হামীম গ্রুপে ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার সামনের সড়কে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর চালায়।
সংবাদটি আশপাশের কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা মহাসড়কে এসে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় শ্রমিকরা টঙ্গী-বাইপাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ৮/১০টি গাড়ি ভাঙচুর করে। প্রায় তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। আশপাশের প্রায় ১৫-২০টি কারখানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর করে।
সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ছবি তোলার সময় মোহনা টেলিভিশনের সাভার প্রতিনিধি সঞ্জীব সাহার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় শ্রমিকরা। অন্য দিকে দেশ টিভি, এটিএন বাংলা,এর প্রতিনিধিদের ক্যামেরাও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে সাত সাংবাদিক।
পুলিশ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে সংঘর্ষের সময় ওপেক্স গ্রুপের মহিলা শ্রমিক নাহার বেগম ওরফে গোলাপ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে শ্রমিকরা। তবে পুলিশ জানায় বিক্ষোভের সময় নাহার দৌড় দিলে গাড়িচাপায় মারা গেছেন। এলাকাজুড়ে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শতাধিক।