বার্তা৭১ ডটকমঃ দায়িত্বগ্রহণের পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও মঙ্গলবারই প্রথম স্টেট ডিপার্টমেন্টে আসলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ দফতরে আসার পর ডিপার্টমেন্ট কর্মকর্তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হলেন ট্রাম্পের আস্থাভাজন এই সেনাপতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে উজ্জিবীত করে মাইক পম্পেও বলেন-“ আমি এখানে এসেছি পুরাতন আর স্থির অবস্থার মধ্যে গতি সঞ্চার করতে।” মন্ত্রণালয়ের সবাইকে একসঙ্গে করে যুক্তরাষ্ট্রকে সামনে এগিয়ে নেবারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের স্টেট ডিপার্টমেন্টে আনুষ্ঠানিক অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়া মাইক পম্পেও । যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পরপরই বিদেশ সফর দিয়েই শুরু হয় তার পররাষ্ট্র মিশন! দফতরে আসার আগেই লম্বা সফরে ঘুরে এসেছেন বেলজিয়াম আর মধ্যপ্রাচ্য। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর ধকল সামলেই প্রথমবার অফিসে পা রাখলেন মাইক পম্পেও।
অভিষেক বক্তব্যে হাস্যেজ্জ্বল পম্পেওকে বুঝি সেদিকে ইংগিত করেই বলে উঠলেন-“ প্রথম দিন অফিসে আসার আগেই আমি দীর্ঘ সফরের একটা রেকর্ড ঝুলিতে ভরে নিয়েছি।”
এসময় লবির উপরতলায় যারা দাঁড়িয়ে তার বক্তব্য শুনছিলো তাদের উদ্দেশ্য কৌতুক করে পম্পেও বলেন, – “আমার সব কাজের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ হচ্ছে- আমি শুধু যারা নিচতলায় থাকেন তাদের সঙ্গেই কথা বলিনা, উপরে যারা আছে তাদের সঙ্গেও কথা বলি!”
পররাষ্ট্র নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সামনে এগিয়ে নিতে সহকর্মীদের এক কাতারে আসার আহবান জানিয়ে নতুন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো পররাষ্ট্রনীতিতে প্রাণ সঞ্চার করতে আমি দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছি। এমন সময়ে আমি এখানে এসেছি যখন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে খুবি স্পর্শকাতর একটা সময় পার করছে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেবার জন্য ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মাইক বলেন- “আমার কাজ হচ্ছে আপনাদের নেতৃত্ব দেয়া। আপনাদের সহযোগিতা ব্যাতীত যুক্তরাষ্ট্র কাংখিত লক্ষ্যে যেতে পারবে না। আমি সেকাজে আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই।”
তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট এবং দেশের জন্য আমরা কাজ করে যাবো। “
নিজের লক্ষ্য খুবি সুস্পষ্ট এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে মাইক পম্পেও বলেন, “আমি আমার মিশন ঠিক করে রেখেছি। মিশনকে উজ্জ্বিবীত রেখে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে দলকে নিয়ে মাঠে থাকবো। আমি জানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আর এখানকার মানুষরা সেটা পারে।”
আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উপস্থিত থাকবেন জানিয়ে মাইক বলেন,” আগামীকাল শপথ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট উপস্থিত থাকবেন। তার সঙ্গে কেবিনেটের অন্য মন্ত্রীরাও স্টেট ডিপার্টমেন্টে আসবেন। এ জায়গায় প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিটা হবে খুবি গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।”
পম্পেও বলেন, “স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাজটা আমার কাছে একটা বিশাল দায়িত্ব। কিভাবে আমরা মিশনের দিকে এগিয়ে যাবো সেটা আমাদের জানতে হবে। যদি ব্যক্তি হিসেবেও নিজেকে চিন্তা করি তাহলে বলবো- আমার আত্মবিশ্বাস আছে। আমি জানি আপনারা কারা। আপনারা দেশকে ভালোবাসেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেরা নাগরিক হিসেবেই এ মন্ত্রণালয়ের কাজকে বেছে নিয়েছেন। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে চান বলেই আপনারা এখানে এসেছেন। আমার কাজ হচ্ছে সে পথে আপনাদের নেতৃত্ব দেয়া।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজকে এগিয়ে নিতে সহকর্মীদের কাছ থেকে বেশি করে শুনতে ও শিখতে চান বলেও জানান মাইক পম্পেও।
তিনি বলেন, “পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে যুক্তরাষ্ট্রের দূতরা থাকবে। তাদের কাজ হবে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনে বাস্তবায়ন করা।”
বেলা ১:৩০ মিনিটে স্টেট ডিপার্মেন্টে পৌঁছলে গাড়ি থেকে নামার পর নতুন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে লবিতে নিয়ে আসেন ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন জে সোলিভান ও টমাস এ শ্যানন। পরে হল ভর্তি কর্মকর্তা ও কূটনীতিকরা করতালী দিয়ে তাকে সাদর সম্ভাষণ জানান।