বার্তা৭১ ডটকমঃ পুরো বিশ্বকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ইরান পরমাণু থেকেযুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেবার ঘোষণা দিয়েছেন। ‘আমেরিকাফাস্ট’ নীতিতে বিশ্বাসী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
‘আমি যা বলি তাই করি’ উল্লেখ করে মঙ্গলবার হোয়াইটহাউসে দেয়া এক ঘোষণায় ট্রাম্প ইরানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চুক্তির কারণে যেঅবরোধ সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো তা আবারো নতুন করে আরোপ করা হবে।ইরানের চলমান চুক্তিকে পঁচা এবং অনুপযোগি আখ্যা দিয়েট্রাম্প বলেন, এটি খুবি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে চলমান পঁচেযাওয়া চুক্তি দিয়ে আমরা কিছুতে ইরানের পরমাণু বোমাবানানো বন্ধ করতে পারবো না।
ইরান চুক্তিটাই ত্রুটিযুক্ত বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনিবলেন, যদি এটা বন্ধ না করতে পারি তাহলে পরিণতি কিঘটবে তা একেবারে স্পষ্ট।
ট্রাম্প বলেন, আমাদের প্রশাসন আরো নতুন করেঅর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের অংক কষছে।
ইরানকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মদদতা উল্লেখ করে ট্রাম্প আরোবলেন, মধ্যপ্রাচ্যে বিপদজনক সব ক্ষেপণাস্ত্র আরজ্বালানির যোগনাদাতা ইরান। হিজবুল্লাহ, হামাস, আলকায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠাকে আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে যাচ্ছেএই দেশ।
তিনি আরো বলেন, নিজ দেশের জনগণের সম্পদ কুক্ষিগতকরে ইরান বিশৃঙ্খলা আর সন্ত্রাসের শাসন কায়েম করেছে।এ বিপদজনক অবস্থা রোধে দেশটির সরকার কোনোব্যবস্থাতো নেয়নি উল্টো পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে।
ইরান চুক্তি ভঙ্গ করছে অভিযােগ করে ট্রাম্প বলেন, চুক্তিরকারণেই ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছ। যারসুবাধে পরমাণু অস্ত্র তৈরির মোক্ষম সুযোগ পাচ্ছে।চুক্তিতেদেশটিকে পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ রাখতে সীমিত শর্ত দেয়াহয়েছে। আর অন্যদিকে দেশটির সিরিয়া, ইয়েমেন এবংঅন্য প্রান্তের অৎপরতা নিয়ে কিছু বলা হচ্ছে না।
ট্রাম্প জানান আমাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে, ইরানযা প্রতিজ্ঞা করে আসছে তা একদম মিথ্যা।গত সপ্তাহেইসরায়েলের গোয়েন্দা তথ্যে তা বের হয়ে এসেছে।
পরমাণু চুক্তিকে একতরফা আখ্যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্টবলেন, এর আগে কখনো, কোনো কালে এমন একতরফাচুক্তি আর হয়নি। এটা শান্তি বয়ে আনবেনা, আনতে পারেনা।
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র কথার বরখেলাপ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। হোয়াইট হাউস থেকে চুক্তি বাতিলের ঘোষণার পর পরই এক টেলিভিশন বক্তৃতায় রুহানি এই মন্তব্য করেন। যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন বলে মনে করে রুহানি বলেন, ‘কম্প্রিহেনশিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) কিংবা ‘ইরান চুক্তি’ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি নয়। এটি কয়েকটি দেশের সঙ্গে বহুজাতিক একটি চুক্তি। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আরও পাঁচটি দেশ এই চুক্তিতে রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ঘোষণার বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ট মিত্র ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রন এক তাৎক্ষণিক টুইট বার্তায় এ ঘোষণার বিরোধিতা করেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইরান চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণাকে সাহসিকতাপূর্ণ ও সময়োপযোগি বলে স্বাগত জানিয়েছে ইসরাইল। , সৌদি আরবও ট্রাম্পের চুক্তি বাতিলের ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়েছে।