বার্তা৭১ ডটকমঃ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণা অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করার দাবিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা।
রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় এই বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে হাজারো শিক্ষার্থীর একটি মিছিল মধুর ক্যান্টিন, ঢাবির বিজনেস ফ্যাকাল্টি, বিজয় একাত্তর হল, বসুনিয়া, ভিসি চত্বর, শহীদ মিনার হয়ে কার্জন হলের দিকে যায়।
মিছিলটি হাইকোর্টের মোড় এলাকায় গেলে বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে তাদের বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগ হয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
এ সময় পরবর্তী সময়ের কর্মসূচি জানিয়ে আন্দোলনকারীদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তারা ছাত্রসমাজের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এটা ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। আজ বিকেল ৫টার মধ্যে যদি প্রজ্ঞাপন জারি না হয় তবে আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে ছাত্রসমাজ ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবে। যদি প্রজ্ঞাপন জারি হয় তবে আমাদের পাঁচ দফার আলোকে দিতে হবে।
যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ৩২ দিন পার হলেও এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। পাঁচ জেলার নাম এক সপ্তাহে পরিবর্তন হলেও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এত দিন পর হলেও এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। আজকের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকাল থেকে সারা দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করছে শিক্ষার্থীরা। মিছিলে শিক্ষার্থীরা, আর নয় কালক্ষেপণ, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন, শেখ হাসিনার ঘোষণা, বাস্তবায়ন করতে হবে, ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
এ ছাড়া একই সময়ে চট্টগ্রাম ষোলশহর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের লালবাগ ও কারমাইকেল কলেজ, বরিশাল, কুমিল্লা ও টাঙ্গাইলসহ সারা দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের সংবাদ পাওয়া গেছে।
এর আগে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে রবিবারের আন্দোলনের ঘোষণা দেন নুরুল হক নুর। কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
গত ৮ এপ্রিল থেকে টানা পাঁচদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে। ১২ এপ্রিল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করে সব চাকরিতে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই ঘোষণার এক মাস পূর্ণ হলেও এখনো কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। সর্বশেষ ১০ মে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান ‘কোটা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে’ বলে জানালেও প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।