হরতালে সচিবালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্তদের চার্জশিট দাখিল না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার-উল হকের তৃতীয় বেঞ্চে (একক বেঞ্চ) শুনানি শেষে সোমবার এ আদেশ দেয়া হয়।
এম ইলিয়াস আলীকে ‘গুমের’ প্রতিবাদে গত ২৯ এপ্রিল হরতালের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়, বোমা বিস্ফোরণ ঘটে সচিবালয়ে। এ দুই ঘটনায় তেজগাঁও ও শাহবাগ থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, আ স ম হান্নান শাহ এবং এলডিপি প্রধান অলি আহমদসহ ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের এ দুই মামলায় আসামি করা হয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতারা গত সপ্তাহে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের বেঞ্চে আগাম জামিনের আবেদন করলে আদালত বিভক্ত আদেশ দেয়। ফলে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হকের একক বেঞ্চে পাঠানো হয়।
দ্বিধাবিভক্ত আদেশে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বিএনপি নেতাদের পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন। পাশাপাশি একটি রুলও জারি করেন। অন্যদিকে কনিষ্ঠ বিচারপতি তাদের সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য রোববারই তৃতীয় বেঞ্চে উঠলেও আরো শুনানির জন্য সোমবার দিন রাখেন বিচারক। দুইদিন শুনানি শেষে সোমবার দেওয়া আদেশে তৃতীয় বিচারপতি আনোয়ার উল হক আগের বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতির দেওয়া আদেশের প্রথম অংশের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। কনিষ্ঠ বিচারপতির আদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আদালতে বিএনপি নেতাদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তার সঙ্গে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যরিস্টার মো. বদরুদ্দোজা বাদল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জামিন পাওয়া নেতাদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও সাদেক হোসেন খোকা, আ স ম হান্নান শাহ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুস সালাম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমান উল্লাহ আমান, সৈয়দা আসিফা আশারাফী পাপিয়া, শাম্মী আকতার, রেহেনা আক্তার, নীলুফার মনি, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাইফুল আলম নিরব, হাবিব উন খান সোহেল, মীর শরফত আলী সুপু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল মতিন, এলডিপি প্রধান অলি আহমদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আন্দালিব রহমান পার্থ রয়েছেন।