বার্তা৭১ ডটকমঃ মহামারী করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে করোনা যুদ্ধে জয়লাভ করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন জয়পুরহাট, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার ৪৬ জন আক্রান্ত ব্যক্তি।
জয়পুরহাট, নোয়াখালী ও কুমিল্লার জেলা প্রতিনিধিরা জানান-
জয়পুরহাট জেলায় মহামারী করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয় মোট ৮৬ জনের শরীরে। এর মধ্যে আজ পর্যন্ত ৭ বছরের একশিশুসহ জেলায় করোনা মুক্ত হলেন ২৯ জন।
আক্রান্ত ৭ বছরের শিশুটি অবশেষে করোনা যুদ্ধ জয়লাভ করে সুস্থ হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেছে। শিশুটি বাড়ি ফেরায় পরিবারের লোকজন সহ প্রতিবেশীরাও আনন্দিত।
সিভিল সার্জন অফিসের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, করোনা আক্রান্ত শিশুটি দরিদ্র পিতা-মাতার ও ভাই বোনের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ থাকতো। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে লুকোচুরি করে লকডাউন ভেঙে সকলেই জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের হেলকুন্ডা গুচ্ছগ্রামে চলে আসে। ২৮ এপ্রিল স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন খবর পেয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। একদিন পরে খবর আসে পরিবারের সকল সদস্যের রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও শিশুটির পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। তখন দিশেহারা পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে ইউএনও’র নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তুলশী চন্দ্র রায়, পুরানাপৈল ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম শিশুটির পরিবারে গিয়ে বুঝিয়ে আইসোলেশনে রাখতে রাজি করানো হয়। গোপিনাথপুরের হেলথ এন্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউিটের আইসোলেশনে শিশুটিকে নেয়া হলেও মনোবল ঠিক রাখার জন্য পাশে আলাদা কক্ষে রাখা হয় বাবাকে। সেখানে খেলাধুলার মধ্যে রেখে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি। শিশুটি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় স্বজন সহ প্রতিবেশীরাও আনন্দিত।
এ ছাড়াও আরো তিন জনকে করোনা মুক্ত ঘোষণা করা হয়। এ নিয়ে জেলায় করোনা মুক্ত হলো ২৯ জন। জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয় ৮৬ জনের শরীরে। অপরদিকে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টায় ঢাকা আইইডিসিআর থেকে ১০১ জনের পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়। যা সব গুলো নেগেটিভ বলে জানান, সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা।
নোয়াখালী জেলায় মোট ১১৯ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্তে রোগীর মধ্যে করোনা জয় করে বাড়ি ফিরেছেন ১১ জন।
জেলার নতুন করে আরো ২২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট ১১৯ জনের করোনা শনাক্ত হলো।
সিভিল সার্জন ডা. মো. মোমিনুর রহমান জানান, এর মধ্যে, আইসোলেশনে থেকে করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরেছেন ১১ জন। এরা হলেন, বেগমগঞ্জে চার জন, সদরে তিন, চাটখিল দুই, সোনাইমুড়ি এক জন ও কবিরহাট এক জন। তিন জন মারা গেছেন।
কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলার দাউদকান্দি উপজেলার নয় জন করোনা পজিটিভ রোগীর মধ্যে ছয় জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুস্থতা ছাড়পত্র ও উপহার সামগ্রী দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। করোনাভাইরাস থেকে আরোগ্য লাভকৃতরা হলেন- উপজেলার রহিমা খানম, রাবেয়া আক্তার, চাঁন মিয়া, রোকসানা আক্তার ও লিপি আক্তার।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহীনুর আলম সুমন বলেন, দাউদকান্দি উপজেলায় নয় জন আক্রান্তের মধ্যে ছয় জন সুস্থ হয়েছেন। সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের ফুলসহ উপহার সামগ্রী দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। সবাই ঘরে থাকলে, নিয়ম মেনে চললে আক্রান্তের হার কমে যাবে। আক্রান্তরা নিয়ম মেনে চললে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।