বার্তা৭১ডটকম (১৫ মে ২০১২) : জিম্বাবুয়ে কর্তৃপক্ষ এইচআইভি প্রতিহত করতে নতুন এবং অদ্ভুত এক পদ্ধতি অনুসরণ করছে। জীবনঘাতী এ রোগের জন্য নারীকে দায়ী করে রাজনীতিবিদরা নারীদের কম গোসল করতে বাধ্য করছেন এবং তাদেরকে অনাকর্ষণীয় দেখাতে মাথার চুল কেটে ফেলতে বাধ্য করছেন। তাদের ধারণা এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমেই দেশে এইডসের বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে। জিম্বাবুয়ের এক সিনেটর মর্গান ফেমাই এক সম্মেলনে বলেছেন, তিনি মনে করেন মরণঘাতী এইডস বেশি বিস্তার লাভ করছে। কারণ আকর্ষণীয় নারীদের কাছ থেকে পুরুষরা নিজেদের নিবৃত করতে পারছে না। নিউ জিম্বাবুয়ের ওয়েবসাইটের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তিনি বলেছেন, নারীদের কাছ থেকে পুরুষকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে আইন প্রণয়ন করে তাদেরকে অনাকর্ষণীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এইচআইভি সচেতনতার ওপর এক পার্লামেন্টারি কর্মশালায় সিনেটর ফেমাই তার পরিকল্পনাকে ক্রিস্টানিটির একটি ধারণার সঙ্গে তুলনা করেন। ওই ধারণাতে খ্রিস্টান নারীদের কেউ কেউ মাঝে মাঝে মাথা ন্যাড়া করে থাকেন। তিনি বলেন, আমি সরকারের কাছে প্রস্তাব করছি তারা যেন এমন একটি আইন প্রণয়ন করেন যাতে নারীদের মাথা ন্যাড়া করতে বাধ্য করা যায়। তাদেরকে কম গোসল করার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ এটাই সব সমস্যার মূল বলে তিনি উল্লেখ করেন। জিম্বাবুয়ের প্রধান বিরোধী দল মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেটিক চেঞ্জের সদস্য সিনেটর ফেমাই গত সপ্তাহে দেশের পার্লামেন্টেও অন্যান্য রাজনীতিবিদের উপস্থিতিতে তার প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন। কয়েক দশকে জিম্বাবুয়েতে এইচআইভি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। সেখানকার ১৪ ভাগ মানুষ এইচআইভি আক্রান্ত অবস্থায় জীবন ধারণ করছে বলে দাবি করা হয়েছে। জিম্বাবুয়ের হাজার হাজার মানুষ এখনও এইচআইভিতে আক্রান্ত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। দেশের ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে একটি পার্লামেন্টারি সম্মেলনে অংশ নিয়ে সিনেটর ফেমাই তার অদ্ভুত মত তুলে ধরেছেন। তার এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক বক্তব্য জিম্বাবুয়েতে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। শত শত পাঠক বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকার ওয়েবসাইটে তাদের মতামত তুলে ধরে এ ধরনের প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছেন। একজন পাঠক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। নিজেকে জিম্বাবুয়ের বৃটেন প্রবাসী হিসেবে দাবি করে মাসিম্বা মুসোদজা বলেছেন, আমি জিম্বাবুয়ের অধিবাসী সেটা ভাবতেই এখন লজ্জা হচ্ছে। আরেকজন পাঠক বলেছেন, স্বাধীনতার ৩০ বছর পর আফ্রিকা উপমহাদেশের সবেচেয়ে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অধিকারী হয়েও আমাদের জনপ্রতিনিধিদের এই অবস্থা। এ দেখে মনে হচ্ছে, আমরা আসলেই সমস্যায় রয়েছি।