বার্তা৭১ডটকম (১৭ মে ২০১২) : আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দিনটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।সকাল সাড়ে সাতটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন।সকাল সাড়ে নয়টায় আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতারা গণভবনে গিয়ে সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। সকাল সাড়ে এগারোটায় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় (বাড়ি-৫১/এ, সড়ক-৩/এ, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা-১২০৯) সাক্ষাত।
দুপুর দেড়টায় বিভিন্ন এতিমখানায় খাদ্য বিতরণ। বেলা দুটোয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৩১তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও সমুদ্র বিজয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রদত্ত ছাত্র সংবর্ধনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিবেন। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতা ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্যে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের সকল স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী এবং দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
একইসাথে দেশ ও জাতির কল্যাণে অসামান্য অবদান রাখার জন্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার সুন্দর জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশব্যাপী দোয়া, মিলাদ মাহফিল, আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ দিবসটি পালনের জন্য দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের সকল শাখার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
১৯৮১ সালের ১৪, ১৫, ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে বিপুল আনন্দ-উল্লাস, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, সপরিবারে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হৃত গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার বজ্র শপথ নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
১৭ মে ১৯৮১ সাল: সারাদেশের গ্রাম-গঞ্জ-শহর-নগর-বন্দর হতে লাখ লাখ অধিকার বঞ্চিত মুক্তিকামী জনতা সেদিন ছুটে এসেছিল রাজধানী ঢাকায়। স্বাধীনতার অমর স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়েছিল ঢাকার আকাশ বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম-পিতৃ হত্যার বদলা নেব’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছিল আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি রাজধানী শহর ঢাকা।
১৭ মে ১৯৮১ পুণর্বার প্রমাণিত হয়েছিল, ‘মুজিব বাংলার বাংলা মুজিবের’। লাখ লাখ জনতার প্রাণঢালা উষ্ণ সম্ভাষণ এবং গোটা জাতির স্নেহাশীষ ও ভালবাসার ডালা মাথায় নিয়ে প্রিয় স্বদেশ ভূমিতে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা।
শেরে বাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি; বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।”
“আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ফলে দেশে গণ-জাগরণের ঢেউ জাগল, গুণগত পরিবর্তন সূচিত হলো আন্দোলনের, গণসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পেল সংগঠনের। দেশবাসী পেল নতুন আলোর দিশা।
দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি নিরলসভাবে দেশের অধিকারহারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরবচ্ছিন্ন লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করার অপরাধে তাকে বারবার ঘাতকদের হামলার শিকার ও কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। জনগণের ভালবাসায় অভিষিক্ত হয়ে দ্বিতীয়বারের ন্যায় রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। একটি উন্নত আধুনিক সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।