বার্তা৭১ ডটকমঃ ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনের দিন চার ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত নয়টি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় রাজধানীর তুরাগ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অন্তত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে সহিংসতার উদ্দেশ্যেই বাসগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ইতিমধ্যে জড়িত বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের দেয়া তথ্যমতে, প্রথমে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে পল্টনে বিএনপির পার্টি অফিসের উত্তর পাশে কর অঞ্চল ১৫-এর একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। এরপর দুপুর ১টায় মতিঝিলের মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এর ঠিক ২৫ মিনিট পর রমনা হোটেলের সামনে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি চলন্ত গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। আর এ ঘটনার পাঁচ মিনিট পর দুপুর দেড়টার দিকে শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে দেওয়ান পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
দুপুর ২টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ সচিবালয়ের উত্তর পাশে রজনীগন্ধা পরিবহনে আগুন দেয়ার পর বংশালের নয়াবাজারে ২টা ২৫ মিনিটে দিশারী পরিবহনে আগুন লাগানো হয়। এরপর পল্টনে জৈনপুরী পরিবহনে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে, মতিঝিল পূবালী পেট্রল পাম্পের কাছে দোতলা বিআরটিসি বাসে বেলা তিনটায় ও বিকেল ৪ টা ২৫ ভাটারা কোকাকোলা মোড়ে ভিক্টর ক্ল্যাসিক পরিবহনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
বাসে আগুন দেয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে প্রতিটি বাসের অধিকাংশ পুড়ে গেছে বলেও জানানো হয়।
এ বিষয়ে পল্টন থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গুলিস্তানে সদরঘাটগামী ভিক্টর ক্লাসিক গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। আগুনের ঘটনা এখন পর্যন্ত আমরা যে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি তাতে মনে হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে দুর্বৃত্তরা বাসে আগুন দিয়েছে। তবে কে বা কারা করেছে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।
অন্যদিকে এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ বলেন, কাঁটাবন এলাকাতে একটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া রাজধানীর আরো বেশ কিছু এলাকাও একই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মো. ওয়ালিদ হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে বাসে আগুন দিয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এসব ঘটনায় পৃথক পৃথক থানায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-১৮ আসনে চলমান উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।