যোগাযোগ ও রেলমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘নিজেদের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে গিয়ে বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে বিদেশিরা নাক গলাতে সুযোগ পাবে। আর বিদেশীরা নাক গলানোর সুযোগ পেলে দেশের রাজনীতিতে এক-এগারোর মতো দুর্যোগ আসে। আমার আশঙ্কা, এবার এক-এগারোর পরিবেশ তৈরি হলে তা আরো ভয়াঙ্কর রূপ নিবে।”
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে পাক্ষিক তথ্যপত্রের ২০তম প্রতিষ্ঠা বাষির্কী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন। পত্রিকাটি ‘জাতি গঠনে সংবাদপত্রের ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন,‘‘কিছু বর্ণচোরা রাজনীতিক বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এদের দংশন বিষাক্ত সাপের চেয়েও ভয়ংকর। এই চিহ্নিত প্রতারকরা ঘোলা পনিতে মাছ শিকার করতে চায়। এদের থেকে সবাই সতর্ক থাকবেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ২৫ জানুয়ারি নির্বাচনের কথা বলে সংবিধান ও নির্বাচন কমিশনের কোন আইন লঙ্ঘন করেছেন? নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা, মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা নেয়ার কাজ করবেন ইসি। প্রধানমন্ত্রী তো তা করেননি।’’
কাদের বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা নির্বাচনের কথা বলে কি অপরাধ করেছেন? স্বাভাবিকভাবেই তো এ সময় নির্বাচন হওয়ার কথা। তাছাড়া আগাম নির্বাচন করার ঘোষণাও তো প্রধানমন্ত্রীর দিতে পারেন। এটি তো ইখতিয়ার আছে।’’
কালো টাকা সাদা করার বিরোধীতা করে তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতিতে কালো টাকা বন্ধ করতে না পারলে গণতন্ত্রকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলতে হবে। আসল কথাটা কেউ বলেন না। নির্বাচনে ১৫ লাখ টাকার জায়গায় প্রার্থীরা খরচ করেন ১৫ কোটি টাকা।’’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের ছয় মাস আগে সরকার, বিরোধী দল ও নির্বাচন কমিশন মিলে আলোচনা হতে পারে। এটি নিয়ে এখন থেকে এত তোলপাড় হচ্ছে কেন?’’
সাংবাদিকদের দায়িত্বশীলতা নিয়েও যোগাযোগমন্ত্রী বিভিন্ন প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘জনসংযোগহীন সাংবাদিকতা জনসংযোগহীন রাজনীতির মতোই আত্মবিনাশী। গণতন্ত্রের জন্য দায়িত্বশীল রাজনীতির সঙ্গে দরকার দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা।’’
দুর্ঘটনা রোধ ও যানজট নিরসনে সমন্বিত প্রচেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘গত এক বছরে বেশ কয়েক জন সাংবাদিক নিহত ও আহত হয়েছেন, এগুলো আমাকে কষ্ট দেয়। এগুলোকে ঘটনা না দুর্ঘটনা বলবো! আমার আওতায় ঘটলে তার দায় আমাকে নিতে হবে। দায় এড়াতে পারবো না। সঠিক তদন্ত করে সত্যটা উন্মোচন করাই আমার কাজ।’’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘ছত্রাকের মতো পত্রিকা বাড়ছে। আপনারা বলুন, মানসম্পন্ন পত্রিকা কয়টি আছে? সাংবাদিকরা যা দেখে, তা লেখে না। মাঠে না গিয়ে অন্যের থেকে ধার নিয়ে রিপোর্ট করে। আপনারা এই পেশায় এসেছেন, ভালো সাংবাদিকতা করুন।’’
সম্প্রতি তাকে নিয়ে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘রাজনীতির ন্যায় সাংবাদিকতায়ও অপপ্রচার চলছে। আপনারা সমালোচনা করুন কিন্তু অপপ্রচার করবেন না।’’
আওয়ামী লীগরে এ নেতা আরা বলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতির রঙ্গিন বেলুন উড়িয়ে লাভ নেই। আমাদের কৃত প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। পুরো না পারি দায়িত্বশীল চেষ্টা করতে তো পারি।’’
পাক্ষিক তথ্যপত্রের উপদেষ্টা সম্পাদক এম আবদুল হাই মিলনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পত্রিকাটির সম্পাদক রকিবুল আলম, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হায়াতুন নাহার সৃজন, ডা. মিজানুর রহমান প্রমুখ।