চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জ থেকে শুক্রবার ইয়াবার একটি বড় চালানসহ গডফাদার আবদুল রশিদ ওরফে খুলুই সহ ৪ ব্যক্তি আটক করা হয়েছে। আটকের পর থেকে কে এই রশিদ এ নিয়েছে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের হাজী আলী আহমেদ এর পুত্র আবদুর রশিদ ওরফে খুলুই চট্টগ্রামে ইয়াবার কারবারের অন্যতম নিয়ন্ত্রক। মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসার পর ৭ থেকে ৮ জন সহযোগীর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করে আসছিলেন তিনি। এম সোহায়েল সাংবাদিকদের বলেন, রশিদের সঙ্গে মিয়ানমারের মাদক ব্যবসায়ীদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। ১০ থেকে ১২টি চোরাকারবারি দল এভাবে মিয়ানমার থেকে মাদক পাচারে জড়িত। আর মাদকের চালান সীমান্ত পার করে আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে কক্সবাজারে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যবহার করা হয় বলেও জানান তিনি।
অনুসন্ধানে জানা যায, এক সময়ের মিয়ানমার নাগরিক রশিদ টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ আসেন ১৯৭৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে। তারা ৩ ভাই শাহপরীরদ্বীপে এসে তাদের চাচা হাজি আবদুল গফ্ফার এর বাড়িতে অবস্থান নেন। এর পর তারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। তার অপর ২ ভাই হলো, হোসেন আহমদ ও হাফিজ উল্লাহ। এর ২ বছর পর আবদুল রশিদ শাহপরীর দ্বীপ এলাকার মৌলভী সিরাজুল ইসলামের মেয়েকে বিয়ে করে। গত শুক্রবার ইয়াবা চালানের সাথে তার শ্যালেককেও আটক করেছে।
বিয়ের পর থেকে আবদুল রশিদ পুরোদমে জড়িয়ে পড়েন চারাচালান ব্যবসায়। রাতারাতি কোটি টাকার মালিক হয়ে সে অবস্থান করে চট্টগ্রামে। তার বিরুদ্ধে সার পাচারের মামলাও রয়েছে।
জানা যায়, আবদুল রশিদের স্ত্রীর বোন এবং মৌলভী সিরাজুল ইসলামের অপর এক কন্যা ইয়াবার গডফাদার একটেল রমজানের ভাই আবদুল করিমের স্ত্রী। একটেল রমজানের সাথে তালত ভাই সম্পর্কের জের ধরে রশিদ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আশি দশকের শুরুতে মিয়ানমার সরকারের সাথে গোপন চুক্তির মাধ্যমে “ইউনাইটেড ওয়া স্টে-ইট আর্মি” নামের একটি সংগঠণ কারাখানা স্থাপন করে ইয়াবা তৈরী শুরু করে। ওই সময় বাংলাদেশে ইয়াবার তেমন পরিচিতি ছিলো না। কিন্তু ৯০ দশকে মাদক দ্রব্যটি বাংলাদেশের এক শ্রেণীর উচ্চ বিলাসী সেবককারীদের প্রিয় হয়ে উঠে। যার সূত্র ধরে টেকনাফের হাজী বশর এর পুত্র বহুল আলোচিত একটেল রমজান ও বার্মাইয়া শুক্কুর নামের ২ জন হুন্ডি ব্যবসায়ী ২০০০ সালের শুরুকেই বাংলাদেশে ইয়াবা আনতে শুরু করে। তাদের হাত ধরে রশিদ বাংলাদেশের ইয়াবা ব্যবসাীয়দের গডফাদার হয়ে উঠে। আর রশিদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে টেকনাফের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের।