প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত তিন বছরে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি এবং জনগণের জীবনযাত্রার মানোয়ন্ননে অর্জিত সাফল্য তুলে ধরার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতি খাতে দ্রুত অগ্রগতি হচ্ছে এবং আমাদের এই সাফল্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতের পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানোন্নয়নেও গুণগত পরিবর্তন এনেছে।
তিনি রোববার রাতে নিউইয়র্ক সিটিতে আয়োজিত ‘সমুদ্র বিজয় উৎসব’ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে সোমবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণকালে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, নিউইয়র্ক সিটি আওয়ামী লীগ, বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সংগে আইনী লড়াইয়ে বাংলাদেশের বিজয় উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কুইন্স প্যালেসে আয়োজিত এ উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ জার্সির মেয়র।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান এবং তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনাময় দেশ। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে নিরলস প্রচেষ্টা চালায় ।
শেখ হাসিনা বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে কাজ করার এবং বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি তুলে ধরতে প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থার উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে টেকসই করতে যুদ্ধাপরাধী ও দুর্নীতিবাজদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের ও দুর্নীতিবাজদের বিচার ভণ্ডুল করতে চায়। কিন্তু তারা শতচেষ্টা করেও যুদ্ধাপরাধী ও দুর্নীতিবাজদের বিচার ঠেকাতে পারবে না।
তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি এবং তাদের কর্মীদের জুলুম-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই সময়ে দেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের আস্তানায় পরিণত হয়েছিলো।
বর্তমান সরকার এই বদনাম দূর করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করেছে। পাশাপাশি দেশের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক জোরদার করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
বিরোধী রাজনীতিক ও সংখ্যালঘুদের ওপর বিএনপি সরকারের দমন-নিপীড়নের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিরোধীদের ওপর তাদের নির্যাতন ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কথা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জানা উচিৎ।
প্রধানমন্ত্রী সংকটকালে তাকে ও আওয়ামী লীগকে বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর সংকটকালে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা প্রবাসীদের প্রতি বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচারের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, বিএনপি ও তার দোসররা আজ দেশব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং জনগণের জান-মালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগ নিউইয়র্ক শাখার সভাপতি কমান্ডার নূরুন্নবী ও সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি আবদুস সোবহান গোলাপ ও সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন এ সময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।
নিউ জার্সির মেয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার সুবিধাজনক সময়ে ওই রাজ্য সফরের আমন্ত্রণ জানান।