মাহবুবউদ্দিন খোকনসহ বিরোধীদলের কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে আদালত বর্জন করে পুরান ঢাকার আদালতপাড়ায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
এ সময় তারা মহানগর দায়রা জজ আদালতের জানালার ভাংচুর করেন এবং মহানগর হাকিম আদালতে বিচারকাজ চলাকালে এজলাসের ভেতরে কালো পতাকা ছুড়ে দেন।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যরা মিছিল করার সময় সরকারের মন্ত্রী ও আদালতের বিচারকদের নিয়েও কটূক্তি করেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খোকনকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে কালো ব্যাজ পরে, কালো পতাকা নিয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, মহানগর বিচারিক হাকিম আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত ও জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল করেন ফোরামের সদস্যরা।
এ সময় তারা শ্লোগান দেন- ‘আইনজীবী জেলে কেন, কর্তৃপক্ষ জবাব চাই’, ‘আদালতে রাজনৈতিক প্রভাব, মুক্ত করা, করতে হবে।’
ঢাকা বারের সভাপতি মো. বোরহানউদ্দিন, বিএনপি নেতাদের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক ফারুকী ও ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে শতাধিক আইনজীবী এই মিছিলে অংশ নেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সৈয়দ শাহাবুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মিছিলের এক পর্যায়ে কয়েকজন আইনজীবী আদালতের দরজায় আঘাত করেন এবং জানালার কাচ ভাংচুর করেন।
মিছিল শেষে জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে সমাবেশে মিলিত হন ফোরামের সদস্যরা।
বিএনপিপন্থী আইনজীবী কাজী মো. আব্দুল বারিক সমাবেশে বলেন, “মাহবুবউদ্দিন খোকনসহ বন্দি নেতারা মুক্তি পাওয়া না পর্যন্ত আমাদের আদালত বর্জন চলবে।”
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করছে বলেও অভিযোগ করেন ফোরাম নেতারা।
অন্যদের মধ্যে নুরুজ্জামান তপন, লুৎফে আলম ও মো তরিকুল ইসলাম এ সময় বক্তব্য দেন।
সমাবেশের পর ফোরামের কিছু সদস্য মিছিল করে মহানগর হাকিম আদালতের তৃতীয়স তলায় যান। সেখানে বিচারকাজ চলাকালে এজলাসের ভেতরে কালো পতাকা ছুড়ে দিয়ে আদালত বন্ধ রাখতে বলেন তারা।
এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থক একদল আইনজীবী সেখানে উপস্থিত হয়ে জাতীয়তাবাদী ফোরামের সদস্যদের আচরণের প্রতিবাদ জানালে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
এম ইলিয়াস আলীকে ‘গুমের’ প্রতিবাদে গত ২৯ এপ্রিল সারা দেশে হরতালের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় তেজগাঁও থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করে পুলিশ, যাতে খোকনকেও আসামি করা হয়।
এই মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অধিকাংশ নেতারা কারাবন্দি হলেও হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছিলেন খোকন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিএনপির এই সংসদ সদস্য সোমবার ঢাকার মহানগর দ্রুত বিচার হাকিম এরফান উল্লাহর আদালতে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন। বিচারক ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠাতে বলেন।