ঢাকা,২৪ মে: নিম্ন আদালতে ভাংচুর ও বিশৃঙ্খলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে জামিনের আবেদন করার পর বিএনপিপন্থী আইনজীবীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাই কোর্ট।
ওই সময় পুলিশের দায়ের করা মামলায় অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়াসহ বিএনপি সমর্থক ২২ আইনজীবীকে ১০ দিনের জামিন দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈতবেঞ্চ শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
সকালে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদীন এই জামিনের আবেদন জমা দেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী।
আবেদনকারী আইনজীবীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন।
ওই সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক মোমতাজ উদ্দীন আহমেদ মেহেদী, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী প্রমুখ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান।
শুনানিতে জয়নুল আবদীন বলেন, “মামলায় কোনো অভিযোগ নির্দিষ্ট করে উল্লেখ নেই। শুধুমাত্র জানালা ভাঙ্চুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ ঘটনায় আদালতের নাজির একটি মামলা করতে গেলেও ওখানে কারো নাম ছিল না। পরে ওই একই ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা করেন। এ (মামলায় ঢাকা বারের) নিম্ন আদালতের সিনিয়র আইনজীবীদের নাম রয়েছে।”
এসময় আদালত বলেন, “কোর্ট প্রাঙ্গণে এ ধরনের ঘটনা আদালত অবমাননা। এজন্য জড়িতদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। শুধু জড়িতদেরই নয়, পুরো জাতিরই ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ আদালতকে আমরা আশা-ভরসার স্থল মনে করি। অতীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এখনও ঘটছে। এটি বন্ধ হওয়া উচিত।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, অবশ্যই ‘সরি’ বলা উচিত ছিল। আদালত ভাঙ্চুর করবেন, এটা হতে পারে না।
পরে জয়নুল আবদীন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে আবেদনে লিখিত মুচলেকা জমা দিলে আদালত ১০দিনের জন্য অভিযুক্ত এসব আইনজীবীকে জামিন দেন।
এর আগে মাহবুবউদ্দিন খোকনসহ বিরোধী দলের কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম গত মঙ্গলবার আদালত বর্জন করে বিক্ষোভ ও ভাংচুর করার পর দ্রুত বিচার আইনে এই মামলা করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এতে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করাসহ ৭০ জনের বেশি অজ্ঞাতনামা আইনজীবীকে আসামি করা হয়। আদালতে ভাংচুর এবং বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সানাউল্লাহ মিয়া, বর্তমান সভাপতি বোরহান উদ্দিন, সাবেক সাধারণ খোরশেদ আলম, মহসিন মিয়া, ইকবাল হোসেন, গোলাম মোস্তফা খান, কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ ২২ আইনজীবী আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টে আবেদন জানান।
হাই কোর্ট ওইদিনের ঘটনার জন্য তাদের দুঃখ প্রকাশ করতে বললে তারা সে অনুযায়ী নতুন করে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত এই ২২ জনকে ১০ দিনের জামিন মঞ্জুর করে।
এ মামলার আসামির তালিকায় আরো যারা আছেন তারা হলেন, ওমর ফারুক, আব্দুর নূর ভূঁইয়া বাবলু, আব্দুল খালেক মিলন, জালাল আহমেদ দোলন, হেলাল উদ্দিন, নূরুজ্জামান (১), জীবন, মাসুদ রানা, মাহমুদুর রহমান, মজিবর, দিদার (ছোট), দিদার (বড়), নুরুজ্জামান(২), হেলাল, কামাল হোসেন, মনির, ফারদিন, জ্যাকব, এরশাদুল হক জর্জ, জামাল আলী মিয়া, পাপ্পু ও মিলন।