বার্তা৭১ ডটকমঃ সব বাধা উপেক্ষা করে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। এটি সবচেয়ে বড় সফলতা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ধর্ম ও সামাজিকতার অজুহাতে অচলায়তন ভেদ করে নারীরা এখন সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের অধিকার আদায়ের চেষ্টা করছে। এটি অনেক বড় অর্জন।সোমবার (৮ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে শিশু একাডেমিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ম ও সামাজিকতার অচলায়তন ভেঙে নারী আজ সব খানেই প্রতিষ্ঠিত। এই অগ্রযাত্রার শুরু আওয়ামী লীগের আমলেই। মেয়েদের এমন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। যাতে তারা ভবিষ্যৎ জীবনে আদর্শ গৃহিণী, জননী ও নারী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। জাতীয় সংসদে স্পিকার, সংসদ নেতা, উপনেতা, বিরোধী নেতা সব নারী। এভাবে রাজনীতিসহ বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে আসছে। অচলায়তন ভেদ করে মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। এটি সবচেয়ে বড় সফলতা।’
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। আমাদের জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা নানামুখী পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। নারী-পুরুষ সকলে মিলে প্রিয় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। পাকিস্তান আমলে জুডিশিয়াল সার্ভিসে মেয়েরা আসতে পারত না। বঙ্গবন্ধু মুজিব তাদের সুযোগ দিয়েছেন। আমরা এসে উচ্চ আদালতেও নারীদের নিয়ে এসেছি। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বর্ডার গার্ডসহ সব বাহিনীতে নারীদের অংশ নেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। বিদেশি কূটনৈতিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিও নারীরা হচ্ছেন। স্থানীয় সরকারে নারীদের সংরক্ষিত আসন রেখেছি। ব্যাংকের এমডি, গভর্নর, খেলাধুলাসহ সব যায়গায় নারীদের সুযোগ আছে। ১৯৯৬ সালে রাজশাহীতে প্রমীলা ফুটবল খেলা প্রচণ্ড বাধার মুখে হতে পারেনি, এখন সে অবস্থা নেই।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই নারীর মুক্তি এবং দেশের অগ্রযাত্রা শুরু হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আট বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়েও নির্মাণ করা হবে ‘কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল’। একই সঙ্গে সামগ্রিকভাবে সামনে এগিয়ে যেতে সমাজের সর্বস্তরে নারী-পুরুষকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে ফসলের মাঠ থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, বিজ্ঞান কূটনীতি, প্রশাসন সামরিক অঙ্গনসহ নারীরা এখন প্রায় সম-অধিকারে প্রতিষ্ঠিত সর্বত্র। সরকারের নীতিগত সহায়তা আর সামাজিক সচেতনতায় আলো কিছুটা এলেও, পশ্চাৎগামিতার আঁধার এখনও কাটেনি। এমন প্রেক্ষাপটে ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’ প্রতিপাদ্যে এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবস দিবস পালন করা হচ্ছে বাংলাদেশেও।
শিশু একাডেমিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারীর উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য ৫ ক্যাটাগরিতে ৫ সংগ্রামী নারীকে দেয়া হয় জয়িতা পদক। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এসব পদক তুলে দেয়া হয়।