দেশকে আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে তুলতে কর না দেওয়ার সংস্কৃতি পরিবর্তনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার অনলাইনে কর পরিশোধ কার্যক্রম উদ্বোধন করে তিনি এই আহ্বান জানান। এশিয়ার অনেক দেশের আগে বাংলাদেশে অনলাইনে কর পরিশোধ চালু হওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
“কর দেওয়ার সংস্কৃতি বিকাশে অনলাইনে কর পরিশোধ পদ্ধতি এক নতুন যুগের সূচনা করল,” বলেন শেখ হাসিনা।
এর মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও কর দিতে পারবেন।
আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করলেও কাজের অগ্রগতির কারণে সময়ের আগেই সে লক্ষ্য অর্জন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
উন্নয়নের সুফল তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে তথ্যপ্রযুক্তির সম্ভাবনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আইসিটির এ বিশাল সামর্থ্যকে নিজের করে নিতে আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছিলাম।
“তিন বছরের মধ্যেই আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে অনেক অগ্রসর হয়েছি। ইনশাল্লাহ ২০২১ সালের আগেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা পরমুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে চাই না, আমমদানিনির্ভর হয়ে চলতে চাই না। আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে চাই, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে চাই।”
এই জন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে করপ্রদানযোগ্য প্রতিটি নাগরিককে করের আওতায় আনার তাগিদ দেন তিনি। “আগে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, স্পিকার, সংসদ সদস্যরা কর দিত না। এবার আমরা তাদেরও করের আওতা এনের্ছি,” বলেন তিনি।
করের আওতা ও করদাতার সংখ্যা ও আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য করদাতা ও গ্রহিতা- উভয়েরই মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সার্বিক কর প্রশাসনে সংস্কার ও আধুনিকায়নের ফল হিসেবে গত তিন বছরে রাজস্ব আদায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানান তিনি। চলতি অর্থবছরেও ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তিনি বলেন।
অনলাইনে কর পরিশোধের জন্য ইন্টারেকটিভ ট্যাক্স ওয়েবসাইট নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং অগাস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সেবাগ্রহীতাদের চাপ ধারণের সক্ষমতা রাখার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারের নিরন্তর পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা ই-গভর্নমেন্ট, ই-বাণিজ্য, ই-স্বাস্থ্য, ই-শিক্ষা, ই-ব্যাংকিং চালু করেছি। আজ চালু হল ই-ট্যাক্স পেমেন্ট ব্যবস্থা। প্রতিদিনই আমরা ই-সেবার ক্ষেত্র ও পরিসর বিস্তৃত করছি। সব সীমাবদ্ধতাকে পেছনে ফেলে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।”
“আমরা ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সব নাগরিকের জন্য প্রযুক্তি বিভেদমুক্ত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছি,”, বলেন শেখ হাসিনা।
বিশ্বব্যাপী মন্দা সত্ত্বেও অর্থনীতির সব সূচক ইতিবাচক রাখা সরকারের সাফল্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনলাইনে কর পরিশোধ চালু হওয়া উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে রাজস্ব বোর্ড আয়োজিত অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন আহমেদও বক্তব্য রাখেন।