]আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার রূপরেখা নিয়ে আলোচনার পথ সবসময়ই খোলা রয়েছে, তবে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে নয়।
আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার বিষয়ে বিরোধী দলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে রোববার তিনি বলেন, “আলোচনার পথ খোলা। সব সময় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা অব্যহত রাখার জন্য যে কোনো সময় আলোচনার জন্য প্রস্তুত।”
“তবে তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই”, যোগ করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আশরাফ।
ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাব আমরা চেয়েছি। তারা প্রস্তাব তুললে এ নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে চাই।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নির্বাচনের আগে যে কোনো ধরনের আন্দোলন মোকাবিলার জন্য ১৪ দলকে আরো শক্তিশালী করার বিষয়ে বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে বলেও তিনি জানান।
“জাতীয় সংসদে ১৪ দল যেন ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়েও সভায় আলোচনা হয়েছে। ১৪ দলকে আরো গতিশীল করে আমরা তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।”
ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে- শেখ হাসিনার এই ঘোষণার সঙ্গে ১৪ দলের নেতারা একমত পোষণ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তবে শেখ হাসিনার এই বক্তব্য গণমাধমে ‘বিভ্রান্তিমূলকভাবে’ উপস্থাপন করার অভিযোগ এনে আশরাফ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেননি আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন হবে। বতর্মানে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আছে। এই মাহাজোট সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।”
গণমাধ্যমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে এই মন্ত্রী বলেন, “আপনারাই যদি নিউজ এডিট করে দেন, তাহলে জনগণ এবং বিরোধীদল আমাদের কথাগুলো জানবে কীভাবে?”
আশরাফ বলেন, অন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশেও যথাসময়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের সময় স্থানীয় প্রশাসনসহ অন্যান্য সহযোগী প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে।
“সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। বিষয়টিতে ১৪ দলের নেতারাও একমত”, বলেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে বিএনপির ১০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আশরাফ বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল হয়েছে। তবে রায়ের আলোকে আরো দুইবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখা যেতে পারে। এ নিয়ে বাজারে অনেক কথা আছে।”
“তবে কোনো বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারবেন না বলে রায়ে উল্লেখ রয়েছে। কে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন তা রায়ে বলা নেই। এ নিয়েই তো সমস্যা দেখা দেবে”, বলেন আশরাফ।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেছি।”
“বিএনপি যদি বিকল্প কোনো প্রস্তাব দেয় তাহলে তা নিয়েও আলোচনা করা হবে,” বলেন তিনি।
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির নুরুর রহমান সেলিম, গণ আজাদী লীগের হাজী আব্দুস সামাদ, ন্যাপের এনামুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ১৪ দলের সমন্বয়ক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, কাজী জাফরুল্লা, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুল জলিল, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ নাসিম উপস্থিত ছিলেন।