বার্তা৭১ ডটকমঃ করোনা টেস্ট রিপোর্টে খালেদা জিয়ার আসল জন্মদিনের সঠিক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একাধিক জন্মদিনের নামে জাতিকে এতদিন খালেদা জিয়া অন্ধকারে নিমজ্জিত রেখেছিলেন বলেও জানান তিনি।
সোমবার (১০ মে) সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ১৩টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ও খাদ্য সহায়তা বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অবশেষে খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট রিপোর্টে তার আসল জন্মদিনের সঠিক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একাধিক জন্মদিনের নামে জাতিকে এতদিন খালেদা জিয়া অন্ধকারে নিমজ্জিত করে রেখেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার জন্মদিন করোনা টেস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ মে।
দীর্ঘদিন মানুষ অসত্যের সঙ্গে চলতে পারে না, পারে না সত্যকে লুকিয়ে রাখতে, হাতের তালু দিয়ে যেমন আকাশ ঢাকা যায় না, তেমনি সত্যকেও কখনো আড়াল করে রাখা যায় না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এক নির্মম, বেদনাদায়ক হত্যাকাণ্ড ১৫ আগস্ট। অথচ কতটা নিষ্ঠুর হলে এদিনে খালেদা জিয়া এতদিন তার ভুয়া জন্মদিন পালন করে আসছিলেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালন করা জাতির পিতার হত্যাকারীদের উৎসাহিত করা এবং নির্মম হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করারই শামিল বলে জনগণ মনে করেন। বিএনপির নেত্রী কি পারতেন না শোকাবহ ১৫ আগস্টে ভুয়া জন্মদিনের অনুষ্ঠান না করতে?
বিভিন্ন সময়ে জন্মদিন পালনকারী খালেদা জিয়ার জন্মদিন বিষয়ক আসল সত্য তিনি নিজেই উন্মোচন করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে খালেদা জিয়া কেক কেটে উৎসবের সঙ্গে ভুয়া জন্মদিন পালন করতেও দেখেছে জাতি। খালেদা জিয়ার মেট্রিকুলেশন সনদ অনুযায়ী জন্মদিন ৯ আগস্ট, ১৯৪৫। বিবাহ সনদ ৫ সেপ্টেম্বর, ১৮৪৫। পাসপোর্ট সনদ ১৯ আগস্ট, ১৯৪৫। আবার দাবি করেন ১৫ আগস্ট, ১৯৪৫ তার জন্মদিন। একজন মানুষের এতগুলো জন্মদিন থাকা নিয়ে দীর্ঘদিনের রহস্য এখন নতুন করে খালেদা জিয়াই উন্মোচন করেছেন। অবশেষে করোনা টেস্টের জন্য দেয়া তথ্যে জানা গেছে খালেদা জিয়ার জন্মদিন ৮ মে, ১৯৪৬।
তিনি বলেন, সপরিবারে জাতির পিতার হত্যা দিবসে ভুয়া জন্মদিন পালন করা কতটা নিষ্ঠুর ও বিদ্বেষ প্রসূত রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না ৷
বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে এর আগেও রাজনীতি করেছেন, এখনো করছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তার রোগমুক্তি অবশ্যই কামনা করি। তার বয়স বিবেচনায় ও চিকিৎসার সুবিধার্থে মানবিক নেতৃত্ব শেখ হাসিনা সাজা সাময়িক স্থগিত করেছিলেন। বিএনপি নেতারা এখনো খালেদা জিয়ার চিকিৎসার চেয়ে রাজনীতিকে অধিক মনোযোগ দিচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে বলেন, তার বিদেশ যাত্রার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর বক্তব্য সবাই জেনেছে, তাই এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।
সেতুমন্ত্রী মানুষকে করোনায় সচেতন হতে সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীদের ক্যাম্পেইন পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাইকে শতভাগ মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ঈদ উৎসব যাতে অন্তিম উৎসবে পরিণত না হয় সেদিকেও সবাইকে খেয়াল রাখতে অনুরোধ জানাই।
দেশ-বিদেশে মিডিয়ার একটি অংশ ও কোন কোন নেতা প্রতিনিয়ত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে অন্ধ সমালোচনা করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
এ সময় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির ও সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন।