ঢাকা, ২৭ মে: চলমান রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে বিরোধী দল সংলাপে বসতে রাজি হলে স্পিকার আবদুল হামিদ মধ্যস্থতাকারীর দায়িত্ব পালন করবেন। তবে আলোচনা সংসদের অধিবেশন কক্ষে অথবা অন্য কোনো কক্ষে অনুষ্ঠিত হতে হবে। রোববার স্পিকার সংসদে এ প্রস্তাব দেন।
তিনি বলেন, “পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জাতীয় সংসদে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল বিষয়ে আলোচনার প্রাণকেন্দ্র। বাংলাদেশেও সরকার ও সংসদ-সদস্যদের জন্য সংসদই হচ্ছে সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। সংসদ-সদস্যগণ যে কোনো বিষয়ে সংসদে এসে আলোচনা করতে পারেন। জাতীয় ইস্যুগুলোতে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা অথবা সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যেতে পারে। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশই সকল অগণতান্ত্রিক শক্তিকে রুখতে পারে।”
স্পিকার বলেন, ‘‘জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশে কাজ করা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যূতে জনগণকে সচেতন করে তোলা। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হলে এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হলে মনেপ্রাণে গণতন্ত্রকে লালন করতে হবে। দলীয় ও সংসদীয় কার্যক্রমে এর প্রতিফলন ঘটাতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করি আপনারা সংসদে এসে কথা বলবেন এবং বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্ক করবেন। সংসদীয় কার্যক্রমে বিতর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিতর্কের মাধ্যমেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসে এবং সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সহায়তা করে। জণগন আশা করে, দেশের সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হোক সংসদ। মনে রাখতে হবে সংসদ যতবেশি কার্যকর হবে গণতন্ত্রও ততবেশি শক্তিশালী হবে। তাই সকল সদস্যকে সংসদমুখী হতে হবে। ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের উর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সংসদের এ অধিবেশনেই বাজেট উপস্থাপিত হবে। সংসদীয় পদ্ধতিতে বাজেট অধিবেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণেই সরকারের এক বছরের আয়-ব্যয় ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের হিসাব বিবরণী জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করতে হয়। সংসদ সদস্যগণ তাদের সুচিন্তিত মতামতের মাধ্যমে সরকারি আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাজেটকে জনকল্যাণমুখী করার পরামর্শ দেয়ার সুযোগ পাবেন।’’
বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করি সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যগণ ২০১২-২০১৩ আর্থিক বছরের বাজেটের খুঁটিনাটি তুলে ধরে বাজেটকে আরো অর্থবহ ও বাস্তবমুখী করতে ভূমিকা রাখবেন। মনে রাখতে হবে জাতীয় জীবনে বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। আগামী এক বছরে সরকার জনকল্যাণে যেসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে তারই রূপরেখা থাকবে এ বাজেটে। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে প্রস্তাবিত বাজাটে তাদের দাবি-দাওয়ার প্রতিফলন কতটুকু ঘটেছে তা আপনাদেরই বিবেচনা করতে হবে।’’