বার্তা ৭১ ডট কমঃ জাতীয় সংসদ স্থগিত না করে সুষ্টু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন। ‘দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্টু নির্বাচন সম্ভব’ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে সাবেক কমিশনার সাখাওয়াত বলেছেন,তিনি এ ধরনের স্টেটম্যান না দিলে ভাল করতেন। আমাদেরকেও এ ধরনের প্রশ্ন করা হতো। আমরা কৌশলে জবাব দিতাম। বলতাম ‘ওয়েট এন্ড সি’। তিনি বলেন, আমার পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সংসদ যদি বহাল থাকে। তিনশ এমপি যদি তার পদে থাকেন তাহলে কিছুতেই সুষ্টু নির্বাচন সম্ভব নয়।
আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন ‘চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন সহ বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন।
সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ি বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে নির্বাচন ঘোষণা করতে হবে। সে অনুযায়ি নির্বাচন কালীন সময়ে জাতীয় সংসদ বহাল থাকবে এবং সংসদ সদস্যরাও তাদের পদে থাকবেন।
এবিষয়ে ইঙ্গিত করে সভায় সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাচনের আগে অনেক বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনার দরকার। নির্বাচনের বিষয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনকে অনেক পরামর্শ দিয়ে এসেছিলাম। তারা এসে অভিজ্ঞতা অর্জনের আগেই এসব বাতিল করে দিয়েছেন। জানিনা কোন বিবেচনায় তারা তা বাতিল করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্টু হতে পারে আবার নির্দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু না হতে পারে। এটি নির্ভর করে যারা নির্বাচন পরিচালনা করবে তাদের নিরপেক্ষতার ওপর। নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, কিছু দিনের জন্য হলেও একদিনে সারা দেশে নির্বাচন করা বন্ধ রাখেন। এটিও সুষ্টু নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা। তত্ত্বাবধায়কই একমাত্র সমাধান নয় উল্লেখ করে সাখাওয়াত বলেন, একটি অন্তবর্তী সরকারও হতে পারে। যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার সঙ্কট আছে তাই নির্বাচনকালীন সময়ে ছোট কোয়ালিশনও হতে পারে। যাই করা হোক এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা দরকার। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে আরও কিছু দিক দিয়ে শক্তিশালী করা দরকার। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের কাছ থেকে সাপোর্ট না পেলে বর্তমান অবস্থায় সুষ্টু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ একজন ঋন খেলাপিকে কমিশন নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করার পর নির্বাচনের আগের দিন রাত ১২টায় আদালতের রায় নিয়ে এসে বৈধ হয়ে যান। তখন নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার থাকে না।