বার্তা ৭১ ডট কমঃ পশ্চিমাঞ্চল রেলের অতিরিক্ত চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার এমএম মুরাদের বিরুদ্ধে বাড়ির কাজের শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ওই শিশু একাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেনে চড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। রেলের ওই কর্মকর্তার নির্দেশে রেল কর্মচারীরা তাকে আবদুলপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উদ্ধার করে। এরপরই নির্যাতনের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। শিশুটি রাজশাহী জিআরপি থানায় এসে যৌন নির্যাতনের নির্মম কাহিনী বর্ণনা করে। এদিকে খবর পেয়ে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি ওই শিশুকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।
যৌন নির্যাতনের শিকার ১২ বছর বয়সী কন্যা শিশুটি রাজশাহী জিআরপি পুলিশকে জানায়, তাদের বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম রবিউল ইসলাম। ৪/৫ মাস আগে তার এলাকার আফরোজা নামের এক নারী তাকে রাজশাহী নগরীর ভদ্রা আবাসিক এলাকায় নিয়ে এসে রেল কর্মকর্তা মুরাদের বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসেবে রেখে যান। এরপর থেকেই মুরাদ তাকে নানাভাবে যৌন নির্যাতন শুরু করে। মেয়েটি জানায়, প্রায় সময় তাকে ঘরে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন করতো মুরাদ। এতে দিনের পর দিন শিশুটি অস্থির হয়ে উঠছিল। শিশুটি জানায়, রেল কর্মকর্তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে। তারা স্কুলে গেলেই তার ওপর যৌন নির্যাতন শুরু করা হতো। তাকে ঘরে ডেকে নিয়ে পাশবিক যৌন আচরণ করতো। প্রতিদিনই তাকে ধর্ষণ করা হতো। এতে সে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন ওই রেল কর্মকর্তা। এসব ঘটনার পর থেকে ওই শিশু পালানোর সুযোগ খুঁজছিল। অবশেষে রোববার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রেলস্টেশনে এসে ট্রেনে উঠে পালানোর চেষ্টা করে শিশুটি। কিন্তু বিষয়টি টের পেয়ে মুরাদ লোক লাগিয়ে তাকে আবদুলপুর স্টেশন থেকে ধরে নিয়ে আসে। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এসে কান্নাকাটি শুরু করলে জিআরপি থানা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। এরপরই পুরো ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।
রাজশাহী জিআরপি থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম রসুল জানান, মেয়েটি যে বর্ণনা দিয়েছে তা ভয়াবহ। একজন কুরুচিপূর্ণ মানুষই এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে। তিনি জানান, শিশুটির অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা এসে মামলা দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওসি আরও জানান, শিশুকে যৌন নির্যাতনের খবর পেয়ে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি ওই শিশুকে জিআরপি থানা থেকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক এডভোকেট দিল সেতারা চুনি জানান, শিশুটির পক্ষে তারা মামলা পরিচালনা করবেন। শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।