ঢাকা, ২৯ মে: সাংবাদিকদের ওপর একের পর এক নির্যাতনের ঘটনায় সরকার কঠোর পদক্ষেপ না নেয়ায় সাংবাদিক সমাজ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তাদের এই হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’ ও বিভিন্ন বাংলা ব্লগে।
সাংবাদিকদের উদ্বেগের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন সাধারণ তরুণ-তরুণীরাও। এ নিয়ে দিনভর তোলপাড় চলছে ভার্চুয়াল জগতে। বিষয়টির শুরু হয় সাগর এবং রুনি হত্যার পরপরই। এরপর সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক বিভাস চন্দ্র সাহাসহ কয়েকজন নিহত হলে বিষয়টি আরো জোরালো হয়। সবশেষ গত কয়েকদিনে দৈনিক প্রথম আলোর তিন ফটো সাংবাদিকের ওপর চড়াও পুলিশ আর বিডিনিউজের অফিসে সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিকদের অনেকেই এখন আতঙ্কে আছেন। তারা ফেসবুকে তাদের মতামত জানাতে শুরু করেছেন, ‘উই আর নট সেইফ’।
মঙ্গলবার দুপুর থেকেই ফেসবুক ব্যবহারকারী সাংবাদিকদের অনেকেই নিজেদের ‘প্রোফাইল পিকচার’ হিসেবে বেছে নিয়েছেন কালো ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর লেখা ইংলিশ অক্ষর ‘J’ (Journalist) সম্বলিত ছবি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক সাংবাদিক এরকম ছবি টাঙিয়েছেন তাদের প্রোফাইলে। কেউ কেউ দিচ্ছেন ক্ষোভ আর হতাশার মিশ্রণে নতুন নতুন স্ট্যাটাস।
দৈনিক প্রথম আলোর রিপোর্টার আবুল হাসনাত তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘অন্যের সহায় হবেন কী, সাংবাদিকরা আজ নিজেরাই অসহায় ও অনিরাপদ।’’ দৈনিক নবরাজের সাজিদ সরকার লিখেছেন, ‘‘খবর সংগ্রহকারীরাই এখন অন্যতম খবর হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রতিদিন।’’
দৈনিক সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল তপন সাংবাদিকদের জন্য বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলনা করেছেন ১৯৭১ সালের সঙ্গে। তিনি লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশে সাংবাদিকদের জন্য এখন প্রতিটা মুহূর্ত ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতের মতো।’’
মাছরাঙা টেলিভিশনের রিপোর্টার নাজমুল হোসেন তার স্ট্যাটাসটি লিখেছেন, ‘‘২০১২ সালটা সাংবাদিকদের জন্য একটা খারাপ বছর। আর সাংবাদিক নেতাদের জন্য রমরমা ব্যবসার মৌসুম।’’
হতাশার পাশাপাশি অনেকের কণ্ঠে প্রতিবাদও ঝরছে। দৈনিক সকালের খবরের সিনিয়র রিপোর্টার প্রতীক ইজাজ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘কালো জমিনে ‘J’ হলো সাংবাদিকদের ওপর বর্বর ও নৃশংস হামলার প্রতিবাদের চিহ্ন। এ প্রতিবাদে আপনিও আমাদের সহযোদ্ধা হোন।’’
দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার শেখ মামুন লিখেছেন, ‘‘সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন নিয়ে ফেসবুকে যারা সরব, তারা রাজপথে কেন নীরব? আসুন পিচঢালা রাজপথে হাতে হাত রেখে একসাথে কণ্ঠ মিলাই আমাদের নিরাপদে বেঁচে থাকার স্বার্থেই।’’