বরিশালের হিজলায় পুলিশ কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে তোলপাড় শুরু হলেও ২৪ ঘণ্টায় সংশ্লিষ্ট থানা কোন মামলা নেয়নি। উপরন্তু ভিকটিমের পরিবার চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। অপর দিকে, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য।
হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের কোহিনুর বেগম এক সপ্তাহ আগে বরিশাল আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে একটি পাসপোর্টের আবেদন করেন। এ পাসপোর্টের তদন্ত রিপোর্টের জন্য হিজলা থানা ডিএসবি এএসআই শাহজালালকে দায়িত্ব অর্পণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ওই পাসপোর্টের তদন্ত রিপোর্টের জন্য এএসআই শাহজালাল কহিনুরকে মোবাইল ফোন করে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে আসতে বলেন এবং তার পারিবারিক বিষয় জানতে চান। কহিনুর তার পারিবারিক অবস্থা জানালে এএসআই শাহজালাল বলে একা ডাকবাংলোতে আসতে হবে। গতকাল সকাল ১১টায় কহিনুর তার মামী জহুরা বেগমকে নিয়ে ডাকবাংলোতে গেলে শাহজালাল মামী জহুরাকে রাস্তা থেকে ঘুরে আসতে বলেন। জহুরা ডাকবাংলো থেকে বেরিয়ে গেলে এএসআই শাহজালাল কহিনুরকে কুপ্রস্তাব দেয়, কহিনুর প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ সময় রাস্তায় অপেক্ষমাণ কহিনুরের মামী ডাকবাংলোতে গিয়ে দেখে দরজার বাইরে থেকে তালা ঝোলানো এবং রুমের মধ্যে ধস্তাধস্তির শব্দ শুনতে পান। কহিনুরের মামী রাস্তায় এসে কহিনুরকে উদ্ধারের জন্য চিৎকার করলে স্থানীয়রা ডাকবাংলোতে গিয়ে সামনের গেটে তালা দেখে পেছনের দরজায় নক করে এ সময় শাহজালাল দরজা খুলে দেয়। স্থানীয়রা থানায় জানালে ওসি হিজলা কহিনুর ও শাহজালালকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে তাৎক্ষণিক শাহজলালকে সাময়িক বরখাস্ত করে বরিশালে ক্লোজ করেছেন। গৌরনদী সার্কেল এএসপি শাহেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শাহজালাল ও কহিনুরকে বরিশাল পুলিশ সুপারের কার্যালয় নিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরও ভিকটিমের কোন অভিযোগ থানা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। বার্তা৭১ডটকমকে কহিনুর বেগম জানান, তিনি ঘটনার পর পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে বারবার অনুরোধ করেছেন অভিযোগ নেয়ার জন্য। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরও কেন অভিযোগ তারা নিচ্ছেন না। এ ব্যাপারে বরিশাল পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য বার্তা৭১ডটকমকে জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ভিকটিমের কোন অভিযোগ না নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন তার প্রয়োজন নেই, দোষী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অফিসিয়াল ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।