বার্তা৭১ ডটকমঃ শুরু হলো শোকাবহ আগস্ট, মাসটি আসতেই যেন বাঙ্গালির মনে বেদনার বাঁশি বাজে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাঙালি হারিয়েছে তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। পচাত্তরের কালরাতে ঘাতকদের হাতে প্রাণ হারায় বাংলার এই সূর্য সন্তান। সে রাতেই প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেল। প্রাণ হারান পুত্রবধূ রোজিনা জামাল ও সুলতানা কামাল।
ঘৃণ্যতম এই হত্যাকান্ড থেকে বাচতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিণী আরজু মনি ও কর্নেল জামিল সহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন।
২০০৪ সালের এই মাসেই গ্রেনেড হামলার শিকার হন বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান।
সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ শ্রী চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে।
শোকের মাসকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের জন্মলাভ, মার্চে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে আন্দোলন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের জন্ম, ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও ১১ দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ‘আওয়ামী লীগ’-এর নিরঙ্কুশ বিজয়সহ ইতিহাস সৃষ্টিকারী নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আত্মীয়, শত বছরের ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী স্রষ্টা, বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। উন্নত সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন সারথি।
শোকাবহ আগস্টে সমগ্র জাতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠনসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও ভাবগম্ভীর আর বেদনাবিধুর পরিবেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবস (১৫ আগস্ট) পালন করবে।