ঢাকা, ৬ জুন: দীর্ঘ ৩৫ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করলেন জিয়াউর রহমানের সহচর বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। আবেগতাড়িত কণ্ঠে তিনি উচ্চারণ করলেন, ‘আমি আর পারছি না।’
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
নাজমুল হুদা বলেন, “বিএনপির অভ্যন্তরে থাকা কিছু ভূত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রভাবিত করছে। দলের অভ্যন্তরে থেকে এদের তাড়ানো সম্ভব নয়। বিএনপিকে জিয়ার লাইনে ফিরিয়ে আনার জন্য আমি কাজ করবো।”
তিনি বলেন, “বিএনপির যেসব ত্যাগী নেতাকর্মী বিগত দিনে বিএনপি থেকে চলে গেছেন, যারা নীরব আছেন সেই নেতাদের সংগঠিত করার চেষ্টা করবো। এটাই আমার নতুন রাজনীতি।” নতুন কোনো দল ঘোষণা দেয়ার কোনো পরিকল্পনা তার নেই বলেও তিনি জানান।
নাজমুল হুদা বলেন, “আমার পদত্যাগপত্র আপনাদের কাছে দিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে এটা ম্যাডামের অফিসে পাঠিয়ে দেব।”
নিজে দেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ নেই। সেজন্য তার অফিসে পাঠিয়ে দেব।”
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
তিনি বলেন, “ম্যাডাম যদি আমার অনুরোধে সাড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের জন্য আহবান জানাতেন তাহলে তিনি কি উপরে উঠতেন না নিচে নামতেন?”
তিনি বলেন, “আমি ম্যাডামকে যে সময় দিয়েছিলাম সেই সময়ের মধ্যে ম্যাডাম সাড়া না দেয়াটাই পদত্যাগের প্রত্যক্ষ কারণ।” অবশ্য এর পেছনে আরো অনেক কারণ রয়েছে বলেও তিনি জানান।
মওদুদ আহমদের দিকে ইঙ্গিত করে নাজমুল হুদা তার পদত্যাগপত্রে খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, “একজন জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন বিএনপিতে রাজনীতি করার ইচ্ছা বা আগ্রহ আমার নেই। আপনাকেও সতর্ক থাকতে হবে। এমপি, মন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির অধীনে প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতি সবই তিনি হয়েছেন। বাকী আছে শুধুই সংসদীয় পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রী হওয়া। উনি তো দলের হয়ে সবকিছু বলছেন। আপনাকে অস্তিত্বহীন করার কৌশল ও তার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতার অংশ হিসেবে জানা আছে।”
হুদা বলেন, “তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমানকেও নিরাপদ দূরত্বে রাখার কৌশল তার শিষ্যের মাধ্যমেই তিনি করছেন। আপনার প্রিয় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সান্নিধ্যে থেকে আপনাকে বিচ্ছিন্ন করার কৌশলের তো আপনি নিজেই প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী। আমিতো এই কৌশলেরই সমলোচনা করেছিলাম। নিবেদিত থাকার চরম বেদনা আজ আপনি আমাকে দিলেন।”