ঢাকা : প্রস্তাবিত ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা বৈধকরণের সুযোগ রাখার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। অনতিবিলম্বে সংবিধান ও নির্বাচনী অঙ্গীকারের পরিপন্থী এ প্রস্তাব প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এ দাবি জানায়।
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আসন্ন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে আয়কর আইন সংশোধন করে কালো টাকাকে বৈধ করার যে প্রবিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক।’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ায় অবৈধ উপার্জনকারী ও কর ফাঁকিদাতাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বদলে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। অন্যদিকে নিরুৎসাহিত হচ্ছে বৈধ ও সৎ উপায়ে উপার্জনকারী করদাতাগণ।’
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক অভিযোগ করে বলেন, ‘কালো টাকা সাদাকরণের প্রস্তাব করে নির্বাচনী অঙ্গীকারের এই সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন কালো টাকার মালিকদের অনৈতিক চাপের কাছে সরকারের অসহায় আত্মসমর্পণ ও রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের দৃষ্টান্ত।’
তিনি বলেন, সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অনুপার্জিত আয়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থান বর্ণিত রয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দলের নির্বাচনী অঙ্গীকারে কালো টাকা ও অবৈধ আয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান ঘোষিত হলেও এরূপ অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত সরকারের কথিত দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও সুশাসনের অঙ্গীকারের পরিপন্থী এবং বিশেষ করে মাত্র দেড় বছর পর আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষিতে আত্মঘাতীমূলক।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার একদিকে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য মরিয়া। অন্যদিকে রাজস্ব ফাঁকির সুযোগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত শুধু আত্ম-প্রবঞ্চনাই নয়, সরকার কাঠামো দুর্নীতির ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রকের বহিঃপ্রকাশ।’
প্রসঙ্গত, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজনৈতিক বিবেচনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। অতীতের যে কোনো বছরের অপ্রদর্শিত অর্থ বিদ্যমান করের সঙ্গে ১০ শতাংশ জরিমানায় বৈধ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। যে কোনো খাতে বিনিয়োগ করে কালো টাকা বৈধ করা যাবে।