চিকিৎসা বিল পরিশোধ করতে না পারায় নবজাতকের লাশ তার বাবা-মার কাছে হস্তান্তর না করার ব্যাখ্যা জানাতে হাই কোর্টে হাজির হতে হবে সিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে।
তাদের সঙ্গে মোহাম্মদপুর থানার ওসি মাহবুবুল ইসলামকেও ওই ঘটনায় তার ভূমিকার ব্যাখ্যা দিতে তলব করা হয়েছে। আগামী ১১ জুলাই তাদের আদালতে হাজির হতে হবে।
একটি রিট আবেদনে বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ তলবের এই আদেশ দেয়।
গাজীপুরের এক রিকশাচালকের সন্তান গত ৭ জুন মারা গেলে মোহাম্মদপুরের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বকেয়া পরিশোধ না হওয়ায় লাশ দেয়নি।
ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হলে তার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে রিট আবেদন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পরিচালক একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া। মানবাধিকার সংগঠনটির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
আদালত এই রিট আবেদনে দুটি রুলও দিয়েছে। যার জবাব বিবাদিদের দুই সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে।
মারা যাওয়া ওই শিশুর বাবা-মাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিল পরিশোধে ব্যর্থতায় নবজাতকের লাশ তা বাবা-মার কাছে হস্তান্তরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অস্বীকৃতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং মেডিক্যাল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিনেন্স-১৯৮২ অনুসারে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি/সম্পাদক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকার বিভাগীয় পরিচালক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতাল বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব, মোহাম্মদপুর থানার ওসি, সিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৭ মে গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার ডিগদা গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও রোকেয়া বেগমের একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করে। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাত দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৭ জুন শিশুটি মারা যায়।
মনজিল মোরসেদ বলেন, “হাসপাতালের খরচে ওই শিশুর লাশ উঠিয়ে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করতেও আমরা আবেদন করেছি। আদালত আগামী ২০ জুন এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেছে।”