গ্রিসকে সহজেই ৪-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে ইউরো ২০১২ এর সেমিফাইনালে উঠে গেছে জার্মানি। শুক্রবারের এই জয়ে নতুন একটি রেকর্ড গড়েছে জোয়াকিম লউ এর দল। প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটি জার্মানির টানা পঞ্চদশ জয়।
পিজিই অ্যারেনায় দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের শুরু থেকেই গতিময় ফুটবল উপহার দিতে থাকে জার্মানি ও গ্রিস। যদিও জার্মানির আক্রমণ সামলাতেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে গ্রিসকে। কিন্তু পাল্টা আক্রমণে উঠছিলো তারাও।
অফসাইডের কারণে স্কুরলের গোল বাতিল না হলে ৪ মিনিটেই এগিয়ে যেত জার্মানি। দুর্দান্ত গতিতে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা। তবে গ্রিসের জমাট রক্ষণের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছিলো না কিছুতেই।
২৩ মিনিটে জার্মানির সম্মেলিত একটি আক্রমণ বানচাল করে দেন গ্রিস গোলরক্ষক সিফাকিস।
শেষ পর্যন্ত ৩৯ মিনিটে জার্মানিকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অধিনায়ক ফিলিপ লাম। ডি-বক্সের সামান্য বাহির নেয়া তার শট কামানের গোলার মতো ঢুকে যায় গ্রিসের জালে। সিফাকিস বলে হাত ছোঁয়াতে পারলেও দুর্দান্ত গতিতে ছুটে আসা বল আটকাতে র্ব্যথ হন।
প্রথমার্ধে দুই দলই আরো কিছু আক্রমণ করলেও কেউ আর সফল হয়নি।
বিরতির পর মাঠে নামা জার্মানি হঠাৎ করেই যেন কিছুটা ঝিমিয়ে যায়। গতির পরিবর্তে নিজেদের মধ্যে বল আদান-প্রদাণ করে খেলতে থাকে তারা। এর খেসারতও দিতে হয় কিছুক্ষণ পর।
৫৪ মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে প্রতিপক্ষের ডি-বক্স লক্ষ্য করে লম্বা পাস দেন গ্রিসের এক খেলোয়াড়। ডান প্রান্ত দিয়ে দৌড়ে গিয়ে ওই বল ধরেন দিমিতরিস স্যালপিংগিদিস। আড়াআড়ি শটে তিনি বল ফেলেন জার্মানির গোল মুখে। দৌড়ে গিয়ে পায়ের আলতো ছোঁয়ায় লক্ষ্যভেদ করেন গ্রিস স্ট্রাইকার জর্জ সামারাস। হতবাক জার্মানি কিছু বুঝে ওঠার আগেই খেলায় সমতা ফেরে।
এক গোল হজমের পর আবার যেন জেগে ওঠে ২০০৮ ইউরোর ফাইনালিস্টরা। একের পর এক পরিকল্পিত আক্রমণে প্রতিপক্ষ রক্ষণকে এলোমেলো করে দেয় তারা।
৬১ মিনিটে জার্মানিকে আবারো এগিয়ে নেন স্যামি খেদিরা। ডানপ্রান্ত দিয়ে জেরম বোয়েটাংয়ের ক্লিপড ক্রসে লাফিয়ে উঠে পা চালান রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা। ক্রসবার ছুঁয়ে বল জড়িয়ে যায় জালে। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় জার্মানি।
এরপর হঠাৎ করেই যেন ভেঙ্গে পড়ে গ্রিসের রক্ষণ। মিরোস্লাভ ক্লোসা ও মার্কো রুসের লক্ষ্যভেদে ছয় মিনিটের ব্যবধানে আরো দুই গোল পায় জার্মানি।
৬৮ মিনিটে মেসুত ওজিলের ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা দুর্দান্ত হেডে জালে পাঠিয়ে নিজের ৬৪তম আন্তর্জাতিক গোল করেন জার্মানির অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড়।
৭৪ মিনিটে ওজিলের কাছ থেকে বল পেয়ে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ক্লোসা। দৌড়ে এসে হাঁটুগেড়ে ওই বল আটকে দেন সিফাকিস। বল ছিটকে গিয়ে পড়ে রুসের পারে। লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি রুস।
জার্মানির জয় তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ওই সময় গ্রিসের ফোটাকিসের ক্রস বক্সের মধ্যে হাত দিয়ে আটকান বোয়েটাং। পেনাল্টি বাঁশি বাজান রেফারি। ৮৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন স্যালাপংগিদিস।
হারের ব্যবধান কমালেও ওই গোল গ্রিস সমর্থকদের উল্লোসিত করতে পারেনি।