আর্সেনিক ও লোনা পানির এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করবে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮২ কোটি টাকা।
‘বাংলাদেশ রুরাল ওয়াটার সাপ্ল¬াই অ্যান্ড স্যানিটেশন’ নামে প্রকল্পটির আওতায় দেশের সাত বিভাগের ৩৩ জেলার আর্সেনিক ও লবণাক্ততা চিহ্নিত গ্রামের মানুষ এ সুবিধা পাবেন। প্রকল্পের আওতায় অতি দরিদ্রদের জন্য কম খরচের তিন লাখ শৌচাগারও নির্মাণ করা হবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এ প্রকল্পে মোট ব্যয়ের ৫৫৫ কোটি টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি অর্থ স্থানীয়ভাবে জোগান দেওয়া হবে। চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। শেষ করার সময় ধরা হয়েছে ২০১৬ সালের জুনে।
রেলের উন্নয়নে হাজার কোটি টাকা
এদিকে বৈঠকে রেল খাতের উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে খাতের উন্নয়ন’ শীর্ষক আম্ব্রেলা প্রকল্পটির মাধ্যমে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপদ, দ্রুত ও নির্ধারিত সময়ে ট্রেন অপারেশন নিশ্চিত হবে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩৯৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে ৩২২ কোটি টাকা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) কাছ থেকে পাওয়া যাবে।
রেলের দ্বিতীয় প্রকল্পটি হলো ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের মেইনলাইন সেকশনের (পশ্চিমাঞ্চল) পুনর্বাসন (১ম সংশোধনী)’ প্রকল্প, যেটিতে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডরে মালবাহী ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনের চাহিদা পূরণ এবং রেলওয়ের জন্য নতুন লোকোমোটিভ সংগ্রহে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ১১ এমজি লোকোমোটিভ সংগ্রহ (১ম সংশোধনী)’ প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে একনেকে।
প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। এতে জেবিআইসি (জাপান ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন) ৩৩৫ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে।
সভায় দেশের পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প (২য় সংশোধিত)’ অনুমোদন করা হয়। প্রায় এক হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে ৭৪১ কোটি টাকা বিশ্বব্যাংক এবং ১৪৩ কোটি টাকা নেদারল্যান্ডস সরকারের অনুদান রয়েছে।
সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম অনুমোদিত প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
তিনি বলেন, “সভায় মোট তিন হাজার ৩৯ কোটি টাকা ব্যয় সংবলিত ৮টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৯৬ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাবে। বাকি অর্থ স্থানীয়ভাবে জোগান দেওয়া হবে।”
অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্প হচ্ছে- মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবার এলাকায় ড্রেজিং (১ম সংশোধিত) প্রকল্প (১৩২ কোটি টাকা), ফেরি ও পন্টুন নির্মাণ/পুনর্বাসন প্রকল্প (১২৯ কোটি টাকা) এবং চট্টগ্রাম কলেজ হতে কাপাসগোলা পর্যন্তরোডের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন (গণি বেকারি জংশন হতে বহদ্দারহাট জংশন পর্যন্ত) (১ম সংশোধিত) প্রকল্প (৯০ কোটি টাকা)।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পানি সম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনসহ অন্যান্য মন্ত্রী উপদেষ্টা, সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।