পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী পদে ইউসুফ রাজা গিলানিকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এ রায় মেনে নিয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের চেষ্টা চালাচ্ছে।
পাকিস্তানের দৈনিক ‘দ্য নিউজ’ জানিয়েছে, আদালতের রায়ের পর পিপিপি নির্বাহি কমিটির বৈঠক করেছে। এতে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার পার্লামেন্টারি পার্টির বৈঠক অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রেস কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত জানায় পিপিপি।
মন্ত্রিসভা এখনো আছে কিনা সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে পিপিপি’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর বদর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নেই। ফলে মন্ত্রিসভাও নেই। বিশ্বের যে কোনো জায়গায়ই প্রধানমন্ত্রী না থাকলে মন্ত্রিসভা থাকে না।”
গিলানির জায়গায় মাখদুম সাহাবুদ্দিন এবং চৌধুরি আহমেদ মুক্তারকে নতুন প্রধানমন্ত্রী করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে এর আগে এক খবরে জানায় ‘দ্য নিউজ’।
মাখদুম শাহাবুদ্দিন ন্যাশনাল এসেম্বলি (এমএনএ) সদস্য এবং কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী। আর চৌধুরি আহমেদ মুক্তার পানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী। আগে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্ট আদালত অবমাননার অভিযোগে গিলানিকে দু’মাস আগে দোষী সাব্যস্ত করার পর মঙ্গলবার নতুন করে তার বিরুদ্ধে রায় দিল।
এ রায়ে গিলানিকে প্রধানমন্ত্রী পদে এমনকি পার্লামেন্টে সদস্য হিসাবেও অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
আদালতকক্ষে প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মদ চৌধুরি বলেন, “আদালত অবমাননা মামলার (২৬ এপ্রিল) রায়ের বিরুদ্ধে এখনো কোনো আপীল নথিভুক্ত হয়নি… সুতরাং সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি মজলিস ই-শূরার (পার্লামেন্ট) সদস্য থাকার যোগ্য নন।”
ইফতিখার আরো বলেন, “তিনি আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নন। এ পদ এখন শূন্য।”
আদালতের এ রায়ে আরেক রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়ল পাকিস্তান।
গিলানি কি পদক্ষেপ নেবেন তা স্পষ্ট নয়। তার অপসারণ সরকারের পতন ডেকে আনবে কিনা তাও বোঝা যাচ্ছে না।
পাকিস্তানে সরকার এবং বিচারবিভাগের মধ্যে অচলাবস্থা চলে আসছে আগে থেকেই। গিলানির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায় এ সঙ্কটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
পাকিস্তানের ইতিহাসে গিলানিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় আদালত অবমাননার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির দুর্নীতি মামলা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সুইস কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাতে রাজি না হওয়ার অপরাধে গত ২৬ এপ্রিল গিলানিকে দোষী সাব্যস্ত করে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রেসিডেন্ট হিসাবে আসিফ আলি জারদারির আইনি ছাড় আছে দাবি করে ওই মামলা পুনরুজ্জীবিত করতে চাননি গিলানি।
পরে আদালতের রায়ে গিলানিকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে প্রতীকী সাজা দেওয়া হয়।