নয়া দিল্লি, ২৬ এপ্রিল: সমুদ্রসীমা বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার সীমা নিয়ে একটি রায় দিলেও বাংলাদেশ তার দাবি অনুযায়ী ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস পাবে না। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র’ এ তথ্য জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতের জাতীয় দৈনিক ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এ তথ্য দেয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ’স ক্লেইম টু মিয়ানমার গ্যাস রিজেক্টেড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা র’ এর বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা নিয়ে ঘোষিত রায়টি পর্যালোচনা করে ভারতের রিসার্চ অ্যানালাইসিস উইংস জানিয়েছে, কেবলমাত্র একটি সমঝোতা সীমা নির্ধারিত হয়েছে। বিশেষ করে গ্যাস ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে ব্লক এ-১ ও এ-৩ মিয়ানমারের সীমার মধ্যে পড়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোনো গ্যাস এখান থেকে পাবে না।
মিয়ানমারের রাষ্ট্র পরিচালিত ভারতীয় তেল গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, ব্লক এ-১ ও এ-৩ এ প্রায় ছয় ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রয়েছে। এবং উভয় ব্লকেই ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ার আছে।
বাংলাদেশ ব্লক এ-১ ও অন্য ব্লকগুলোর একটি সমন্বয় সাধনের জন্য লড়াই করেছে। ২০০৮ সালে এ মর্মে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলাও করেছে।
এবং সে মামলায় বাংলাদেশ মিয়ানমারের ব্লক এডি-৭, থেকে এডি-১০ পর্যন্ত এবং এডি-১ থেকে এডি-৬ এর কিছু অংশ দাবি করে।
এবং চীনের সঙ্গে ভূমাত্রিক জরিপের জন্য একটি চুক্তি করে। চীনের জাতীয় পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এই বিষয়টি জরিপের দায়িত্ব নেয়।
বাংলাদেশের এই দাবির ফলে দু’দেশের সম্পর্কের মধ্যে বৈরিতা তৈরি হয়। সে সময় বাংলাদেশের আপত্তির মুখে ব্লক এ-১ ও এ-৩ এর পরিচালনাকারী দাইইয়ু ইন্টারন্যাশনাল সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কাছে তাদের কাজ স্থগিত করে। সে সময়ে বাংলাদেশ ওই এলাকায় নৌবাহিনী প্রেরণ করে।
২০১১ সালের ১৪ মার্চ ইটলস রায় দেয়ার পর মিয়ানমার সাগরে তেল ও গ্যাসের এই নতুন ম্যাপ তৈরি করেছে। কারণ এই রায়ে বাংলাদেশের দাবি থেকে সাগরের ব্লকগুলো কেটে মিয়ানমারের সমুদ্রসীমার সাথে যোগ করা হয়।
র’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘রায়ের কারণে মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা খুবই কম মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’
এ-১ ব্লকের শুয়ি ও শুয়ি ফু গ্যাস ফিল্ডে ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে এ-৩ ব্লকের মিয়া ফিল্ডে ১,৫২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই দুটি ব্লক এখন গ্যাস উত্তোলনের জন্য পুরোপুরি উপযোগী করা হচ্ছে। জানা গেছে, এই দুটি ব্লক থেকে ২০১৩ সালের মে মাস থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে।
উল্লেখ্য, এই দুটি ব্লকে ভারতীয় দুটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর মধ্যে ওএনজিসি বিদেশ লিমিটেড ও গেইল ইন্ডিয়া লিমিটেড এ-১ ও এ-৩ ব্লক থেকে যথাক্রমে গ্যাসের ১৭ শতাংশ ও ৮,৫ শতাংশ গ্যাস পাবে।