পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রথম পছন্দ মখদুম শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর নতুন প্রার্থী হিসাবে রাজা পারভেজ আশরাফকে বেছে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি।
ক্ষমতাসীন জোটের তিন শরিক পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রী সৈয়দ খুরশিদ শাহ, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের (এমকিউএম) হায়দার আব্বাস রিজভী এবং আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) আফরাসিয়াব খাতক শুক্রবার যৌথভাবে এই ঘোষণা দেন।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক ডন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য শুক্রবার বিকেলে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডেকেছেন প্রেসিডেন্ট জারদারি। তার আগেই সংবাদ সম্মেলন করে নতুন প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়ন ঘোষণা করা হলো।
দেশটির আরেক ইংরেজি দৈনিক ডেইলি টাইমস লিখেছে, আদালত বৃহস্পতিবার মখদুম শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করার পর পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ জারদারি বৈঠক করে দলের পক্ষ থেকে সাবেক পানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন।
রাওয়ালপি-ির পিপিপি নেতা পারভেজ আশরাফের বিরুদ্ধেও বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে দুর্নীতির বড় ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে একটি মামলা হওয়ার পর গত বছর তিনি মন্ত্রী পদ ছাড়তে বাধ্য হন।
পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ইউসুফ রাজা গিলানিকে অযোগ্য ঘোষণা করলে ওই পদ নিয়ে ব্যাপক নাটকীয়তা শুরু হয়। পরদিন সকালে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বস্ত্র মন্ত্রী মখদুম শাহাবুদ্দিনকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত করেন জারদারি। তবে বিকল্প প্রার্থী হিসাবে পিপিপির দুই জ্যেষ্ঠ নেতা কামার জামান কারিয়া ও রাজা পারভেজ আশরাফকেও তালিকায় রাখেন তিনি।
সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে মনোনয়নপত্রও দাখিল করেন এই তিনজন। এছাড়া পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নেওয়াজ (পিএমএল-এন) এর পক্ষে পাখতুনখা প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সদর মেহতাব আহমাদ খান এবং জামায়াতে উলামা ই ইসলাম-ফজলের (জেইউএই-এফ) প্রধান ফজলুর রেহমানও প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কিন্তু পিপিপির প্রথম পছন্দ শাহাবুদ্দিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ঘণ্টা দুয়েকের মাথায় তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে পাকিস্তানের আদালত। পারোয়ানা জারি করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির ছেলে আলি মুসা গিলানি ও আরো একজনের বিরুদ্ধে। শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় নিয়ম ভেঙে দুটি প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি ইফেড্রিন উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি। এর পরপরই পাকিস্তানের এন্টি-নারকোটিক ফোর্স (এএনএফ) জানায়, শাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার সময়ের ব্যাপার মাত্র।