প্রস্তাবিত বাজেটের কারণে দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরো প্রকট হবে বলে মনে করে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি।
সোমবার বিকালে প্রস্তাবিত বাজেটের মূল্যয়ন করতে গিয়ে দলের পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “এই বাজেটে কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। সরকারের কোনো লক্ষ্যমাত্রাই অর্জিত হবে না। এতে করে গরিব-ধনীর বৈষম্য আরও বাড়বে। মূল্যস্ফীতি কমবে না। বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সম্পদ আহরণ ও ব্যবস্থাপনা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”
অনৈতিক ও দুর্নীতি সহায়ক কর্মকাণ্ডের বৈধতা দিতেই সরকার বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বলছে বিএনপি।
পাশাপাশি করযুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ২৫ হাজার টাকায় উন্নীতকরণ এবং সর্বনি¤œ করসীমা দুই হাজার টাকায় অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করেছে দলটি।
প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর দাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। নি¤œতম করের সীমা দুই হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।
বিএনপি বলছে, এতে নি¤œ আয়ের মানুষজনকে করের আওতায় নিয়ে আসার ফলে দারিদ্র্য নিরসন কর্মসূচির ওপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করবে।
বাজেটে অনুন্নয়ন ব্যয় ১০ দশমিক ৬ ভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রার উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও রাজনৈতিক চাপের মুখে তা ভেস্তে যাবে বলে মনে করে দলটি।
২০১১-১২ অর্থ বছরে অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছিলো প্রায় ২২ শতাংশ।
বাজেট মূল্যায়নে বিএনপি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে।
দলটি মনে করে, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সম্পদ আহরণ ও ব্যবস্থাপনা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এটা মোকাবিলা করতে গিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নোট ছাপানোর সহজ পন্থা গ্রহণে মাধ্যমে সাসগ্রিক অর্থনীতির ভিত আরও শিথিল এবং অস্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দলের পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এতে চার পৃষ্ঠার একটি লিখিত বক্তব্য পড়েন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার।
এর আগে বাজেট পেশের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির বাজেট পর্যালোচনা প্যানেল বলেছিলো, ২০১২-১৩ অর্থ বছরের জন্য ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেট জনবিরোধী, অন্তঃসারশূন্য বাজেট। এতে সাধারণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য কোনো সুখবর নেই।
এই সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল কাইয়ুম প্রমুখ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৭ জুন সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১২-১৩ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
২৮ জুন সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।
বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৫২ হাজার কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা, তা কমিয়ে ১ লাখ ৬১ হাজার ২১৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।