কার্যনির্বাহী সভা থেকে যে সুপারিশগুলো করা হয়েছিল তার প্রায় সবগুলোরই অনুমতি মিলেছে আইসিসির বোর্ড সভায়। শুধু ভারতের আপত্তির কারণে সব ম্যাচে ডিআরএস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) রাখা হয়নি। ভারতের অনীহার ব্যাপারটি আঁচ করতে পেরেই বোধহয় বোর্ড সভায় কোনো দেশই এ ব্যাপারে ভোটাভুটির প্রস্তাবও তোলেনি। ভারতের ব্যাপারে কিছু না বলতে পারলেও গতকাল আইসিসির বোর্ড সভা থেকে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ১৫ আগস্টের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটেও দুর্নীতিবিরোধী আইন চালু করতে হবে। বিপিএলে সন্দেহভাজন এক পাকিস্তানি জুয়ারি গ্রেফতার হওয়ার পর আইসিসির কার্যনির্বাহী সভায় বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে এ আইনটি চালু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। গতকাল বোর্ড সভায় সেটারই অনুমতি দেওয়া হয়।
মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত বোর্ড সভা থেকে অনেক কিছুর মধ্যে গতকাল কানেরিয়াকে আজীবন নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড থেকে তদন্ত করে কাউন্টি ক্রিকেটে স্পট ফিক্সিংয়ের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছিল পাকিস্তানি স্পিনার দানিশ কানেরিয়ার বিপক্ষে। ২০০৯ সালে অ্যাসেক্স আর ডারহামের একটি ম্যাচে ইচ্ছে করে খারাপ পারফর্ম করেছিলেন কানেরিয়া। এটা প্রমাণিত হওয়ার পর কানেরিয়ার ওপর ইংল্যান্ডে আজীবনের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গতকাল আইসিসিও ইংলিশ বোর্ডের সঙ্গে একমত হয়ে জানিয়ে দিল গোটা ক্রিকেটবিশ্বেই আজীবন নিষেধ থাকবেন কানেরিয়া। ‘ইসিবির নিজস্ব তদন্ত রিপোর্টের প্রতি সম্মান জানায় আইসিসি। একই সঙ্গে তাদের সিদ্ধান্তকেও সমর্থন করে।’
ডিআরএস সিস্টেমেরর ব্যাপারেও আইসিসি তার পুুরনো নিয়মে বন্দি হয়ে আছে। দুই দল সমঝোতায় এলেই কেবল এ সিস্টেমে খেলা চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়াও বোর্ড সভায় ওয়ানডে ক্রিকেটের একটি প্রথার বদল আনা হয়েছে। এখন থেকে ওয়ানডে ম্যাচে এক ওভারে কোনো বোলার একটির বেশি শর্টপিচ বল করতে পারবেন না। আগের নিয়মে দুটো করে শর্টপিচ বল দেওয়ার নিয়ম চালু ছিল।
সভায় আরও একটি সিদ্ধান্ত ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে। কোনো দুই দেশ যদি চায় দিন-রাতের টেস্ট খেলতে, তাহলে আইসিসি তাদের বাধা দেবে না। তবে দিন-রাতের টেস্ট বাধ্যতামূলক করার পক্ষে রায় দেয়নি বোর্ড। বাধ্যতামূলক নেই প্রতিটি ম্যাচে হট স্পট ক্যামেরা বসানোর ব্যাপারটিও। কোনো দুই দেশ যদি রাজি থাকে, তাহলে এ ক্যামেরা ভাড়া করা যেতে পারে। এমন কিছু নিয়ম বাতলে দেওয়া ছাড়াও আয়ারল্যান্ড আর স্কটল্যান্ডকে বড় ধরনের বার্ষিক অনুদান অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের ওই অঞ্চলে ক্রিকেট প্রসারের জন্য ৫ লাখ ডলার অনুমোদন দেওয়া হয়। আইসিসির এ বোর্ড সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল।