বিএনপি এবার যে হাতে মারতে আসবে, সে হাত ভেঙে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলী, দুই মহানগরের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি+সাধারণ সম্পাদকরা ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের যৌথ সভায় গণভবনপ্রান্ত থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এর পর থেকে শুধু মার খেয়েছি। এবার যে হাতে মারতে আসবে, সে হাত ভেঙে দেব।’
১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে। ২০০১ সালের পর বিএনপির অগ্নি সন্ত্রাসে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
এ সময় বিষয় তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে।’
তারেক রহমান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্রিটিশ সরকারকে বলব তারেক রহমানকে ফেরত পাঠাতে। সে সাজাপ্রাপ্ত আসামী।
বিএনপি বিআরটিসির একটি বাস পুড়িয়েছে। এ বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এর পর আগুন দিতে গেলে সবার হাতে মোবাইল ফোন ভিডিও করে যে হাত দিয়ে আগুন দিতে যাইবে, ওই হাত ওই আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে।’
বিএনপি বিদেশে লবিষ্ট নিয়োগ দিয়েছিল। এছাড়া ২০০১ সালে বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। এবারও তারা একই চেষ্টা করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি ধর্ণা দিয়ে লাভবান হয়েছিল। এবারও ভাবছে তাই হবে।’
বিএনপি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের বিষয়ে জানতে লোক নিয়োগ দিয়েছিল। কিন্তু কিছুই পায়নি। তবে বিএনপি বিশ্বব্যাপী সম্পদের গড়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বব্যাপী টাকা রেখেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘(২০০১ সালের পর) আওয়ামী লীগের এমন কোনো জনসভা নেই, যেখানে বিএনপি হামলা করে নাই। বিএনপির আমলে লাঠির বারি খান নাই, এমন একজনও নাই। আমাদের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীর গায়ে তাদের মাইরের দাগ।’
তবে আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না বলে জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তো তাদের উপর অত্যাচারও করতে চাইনি। মারতেও যাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগনের ভোট চুরি করে না। জনগনের ভোট সংরক্ষিত করে। এটা আমরা প্রমাণ করেছি।’
বিএনপি আওয়ামী লীগকে ভোট চুরির অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যখন আমরা ক্ষমতায় আসি, আমরা জনগনের সেবক হিসেবে কাজ করতে শুরু করলাম। জনগন সেটার সুফল পেয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আহমেদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।