ওয়াশিংটন, ৩ জুলাই: পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী যখন প্রতিষ্ঠানটির সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিককে দায়ী করছেন ঠিক তখনই ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান জিম ইয়ং কিম বললেন, এই ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।
সোমবার নিজের প্রথম কর্মদিবসে ব্যাংক সম্পর্কে বাংলাদেশের কঠোর সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে কিম এ কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে তার প্রথম বৈঠকে কিম বলেন, “আমি মনে করি এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। আমরা বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণের জন্য খুবই উদ্বিগ্ন। কিন্তু আমি এটিও জোর দিয়ে বলতে চাই, ব্যাংক কোনো ধরনের দুর্নীতি বরদাস্ত করবে না।”
গত শুক্রবার বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে সরকারের সঙ্গে করা ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি বাতিল করে। এ প্রসঙ্গে ব্যাংক জানিয়েছিলো যে, তাদের কাছে এই প্রকল্পে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রমাণ রয়েছে। তারা বারবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি অবহিত করলেও সরকার কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি।
বাংলাদেশ সরকার ব্যাংকের এই অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা করে ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে অনাকাঙ্ক্ষিত, অপমানজনক এবং রহস্যময় বলে উল্লেখ করেছে। জোরালো প্রমাণ ছাড়া কেবল দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঋণচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশ হতাশাজনক বলে বর্ণনা করেছে।
বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতি বিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালও বিশ্বব্যাংকের এই সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশ সরকারের জন্য অস্বস্তিকর এবং হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছে। এক বিবৃতিতে শুক্রবার সংগঠনটি ব্যাংককে তাদের এই সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে দারিদ্র নিরসনে এই সেতুর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।’
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি সোমবার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকও (এডিবি) এই প্রকল্পে তাদের অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। তবে আরেক উন্নয়ন সহযোগী জাইকা পদ্মা সেতু প্রকল্পে তাদের অর্থায়ন বাতিল করবে না বলে জানা গেছে।