টি-টোয়েন্টিতে নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের (৪/১৯) পর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে (১৩ বলে ৩০ রান) বাংলাদেশকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন মাশরাফি বিন মুতর্জা। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নাটকীয়ভাবে আয়ারল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এই জয়ের ফলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার পাশাপাশি আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে দুই ধাপ এগিয়ে চার নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।
বেলফাস্টের সিভিল সার্ভিস ক্লাব মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪০ রান করে আয়ারল্যান্ড। জবাবে ইনিংসের শেষ বলে ৮ উইকেটে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোহাম্মদ আশরাফুলের (২৪) সঙ্গে তামিম ইকবালের (৩৯) ৬২ রানের জুটি বাংলাদেশকে ভালো সূচনা এনে দেয়। কিন্তু আশরাফুলের বিদায়ের পরই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
দশম আশরাফুলের বিদায়ের পর ১৩তম ওভারটি বাদ দিয়ে ১৬তম ওভার পর্যন্ত প্রত্যেক ওভারে একটি করে উইকেট হারায় অতিথিরা। ৬২/০ থেকে বাংলাদেশ পরিণত হয় ৮৭/৬-এ।
২৯ বলে ৫৪ রান প্রয়োজন, এমন পরিস্থিতিতে মাশরাফি নামার পর খেলার চিত্র পাল্টে যায়। সতেরতম ওভারে কেভিন ও’ব্রায়েনকে ছক্কা মেরে পাল্টা জবাব দেয়া শুরু করেন তিনি। পরের ওভারে জর্জ ডকরেলের শেষ চার বল খেলার সুযোগ মেলে তার আর তাতে ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে চালকের আসনে নিয়ে আসেন তিনি।
১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে মাশরাফি সাজঘরে ফেরার সময় সমীকরণ বাংলাদেশের পক্ষে। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ৭ বলে প্রয়োজন ছিল কেবল ৬ রান। শেষ ওভারে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ট্রেন্ট জনস্টনের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়লে অতিথিরা চাপে পড়ে। কিন্তু আব্দুর রাজ্জাক ও ইলিয়াস সানি দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন।
২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পল স্টারলিং আয়ারল্যান্ডের সেরা বোলার।
এর আগে স্টারলিংয়ের (১৭) সঙ্গে ২৫ রানে উদ্বোধনী জুটিতে আয়ারল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড।
এক ম্যাচেই ফেরা নিয়াল ও’ব্রায়েনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৪৬ রানের কার্যকর জুটি গড়ে স্বাগতিকদের ভালো অবস্থানে নিয়ে যান পোর্টারফিল্ড। ইনিংসের নবম ওভারে প্রথমবারের মতো বল করতে এসেই পোর্টারফিল্ডকে বিদায় করে অতিথিদের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠা এই জুটি ভাঙ্গেন মাশরাফি।
পরের ওভারের প্রথম বলে নিয়াল ও’ব্রায়েন (২২) ও শেষ বলে কেভিন ও’ব্রায়েনকে (০) ফিরিয়ে দিয়ে আরো বড় ধাক্কা দেন মাশরাফি। তিন ম্যাচে এই নিয়ে দুবার রানের খাতা খুলার আগেই সাজঘরে ফিরলেন কেভিন।
পরের ওভারে ফিরে অ্যান্ড্রু পয়েন্টারকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশকে চালকের আসনে নিয়ে আসেন স্বরূপে ফেরা মাশরাফি।
এর পর গ্যারি উইলসনের ২২ ও ট্রেন্ট জনস্টনের ২৪ রানের দুটি ইনিংসের সুবাদে দেড়শর কাছাকাছি স্কোর গড়ে আয়ারল্যান্ড।
১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মাশরাফি বাংলাদেশের সেরা বোলার। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক ২ উইকেট নেন ৩৩ রানে।
৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচ জিতলে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়াকে টপকে আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে যাবে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের হারানোর পর ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের উপরে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে অতিথিরা।
আয়ারল্যান্ড সফর শেষে নেদারল্যান্ডসে মঙ্গলবার স্কটল্যান্ড ও বুধবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে একটি করে টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ।