বার্তা ৭১ ডট কমঃ বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এমন নতুন নতুন পণ্য খুঁজে বের করে তা উৎপাদন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব ব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থী ফোন করে আমাকে তাদের টিফিনের পয়সা দিতে চাইছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসামানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিসিকের এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘ক্ষুদ্র শিল্প ক্ষুদ্র নয়, দিনে দিনে বড় হয়’।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, তথ্য-প্রযুক্তিসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। গত সাড়ে তিন বছরে আমরা প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করেছি।
তিনি বলেন, আমরা চাই, দেশ এগিয়ে যাক। আর পরমুখাপেক্ষিতা নয়। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।
বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুতে ঋণচুক্তি বাতিল করার পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জনগণের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি স্কুলছাত্র আমাকে ফোন করে টিফিন আর যাতায়াতের পয়সা বাঁচিয়ে পদ্মা সেতুর জন্য দেওয়ার কথা বলেছে। এভাবে সারা দেশে জনগণের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে স্মরণ করেন, যুক্তফ্রন্টের শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালে স্থানীয় কাঁচামালভিত্তিক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গ্রামের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিসিক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
বিসিকের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমরা শিল্পনগরীগুলোকে আরও গতিশীল করার উদ্যোগ নিয়েছি। শিল্পায়ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশের সাতটি বিভাগের কয়েকটিতে এরই মধ্যে অর্থনৈতিক এলাক নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে দেশের ৭৪টি বিসিক শিল্পনগরীতে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ লোক কাজ করছে। প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। বছরে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানিও হচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিসিকের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম।
পরে শিল্পমন্ত্রী বিসিকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে একটি ক্রেস্ট উপহার দেন। শিল্প সচিব কেএইচ মাসুদ সিদ্দিকী ও বিসিক চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন বিসিক কর্মীদের তৈরি জামদানী শাড়ি।
অনুষ্ঠানে বিসিকের কার্যক্রমের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্রও দেখানো হয়।