ঢাকা: আমানতের ক্ষেত্রে উৎসে কর ধার্য করায় আমানতকারীরা ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। এতে করে সঞ্চয় কমবে। আর সঞ্চয় কমলে বিনিয়োগ কমে যাবে। যা সার্বিকভাবে অথর্নীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাছাড়া, বিষয়টি সাধারণ গ্রাহকদের কাছে স্পষ্ট না হওয়ায় অনেকেই মনে করছেন, তার আমানত থেকে ১৫ শতাংশ কর নেবে সরকার। এ কারণে তারা ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পাবেন।– অর্থনীতিবিদরা এমন মতই দিচ্ছেন।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সহজে আদায়যোগ্য বিধায় আমানতের ওপরে কর ধার্য করেছে সরকার। যেমনটি করা হয়েছিলো মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে। কিন্তু সরকারের উচিৎ হবে, যারা করের আওতায় আছেন তাদের খুঁজে বের করে আদায় করা। এমন সিদ্ধান্ত সব নাগরিকের জন্য সুবিচার নয়।
গত ২৭ জুন অর্থমন্ত্রী সংসদে উপস্থাপিত ২০১২-১৩ অর্থ বছরের আয় সংক্রান্ত অর্থবিলে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করেন। ইতোমধ্যে রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান এনবিআর এ ব্যাপারে উদ্যোগও নিতে শুরু করেছে। ব্যাংকগুলো তার গ্রাহককে বিভিন্ন মাধ্যমে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে শুরু করেছে। অনেক ব্যাংক তার গ্রাহকদের চিঠি দেওয়া শুরু করেছে।
এদিন অর্থবিল উপস্থাপন করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “যাদের আমানত হিসেবে এক লাখ টাকার বেশি থাকবে কিন্তু কর সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নেই তাদের ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। আর টিআইএন থাকলে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।”
তবে অর্থমন্ত্রী তার বাজেট প্রস্তাবে সব ধরনের হিসাবে যে পরিমান টাকাই থাকুক না কেন কর ধার্যের প্রস্তাব করেছিলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমানতে কর আরোপের বিষয়টি ন্যূনতম এক লাখ টাকা করার সুপারিশ করেন।
এদিকে অনেক গ্রাহক বিষয়টি বুঝতে পারছে না। তাদের ধারণা, তাদের হিসাবে জমা থাকা টাকা থেকে ১৫ শতাংশ কেটে নেবে সরকার। ফলে অনেকটাই আতঙ্ক রয়েছেন সাধারণ গ্রাহকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষ্যমতে, বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছে। সে হিসেবে প্রায় ৬ থেকে ৭ কোটি লোক ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে হিসার রাখছেন।
কিন্তু তার মধ্যে ৮০ শতাংশের হিসাবে এক লাখ টাকার কম থাকছে। ফলে বাকি ২০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায়
এক কোটি লাখ মানুষ এই করের আওতায় আসবেন।
তবে এদের মধ্যে যাদের টিআইএন আছে তাদের হিসাব থেকে উৎসে কর ১৫ শতাংশ কাটা হবে না। আর যাদের টিআইএন আছে তাদের ১০ শতাংশ কাটা হবে।