বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন ‘যুবলীগের’ ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেস আজ। সকাল ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই কংগ্রেসের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলন উপলক্ষে গতকাল সকালে ‘বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগ কার্যালয়ে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মীর্জা আজম জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে সংগঠনটির সম্মেলন না হওয়ার জন্য বিগত চারদলীয় জোট সরকারের অত্যাচার-নিপীড়ন ও ১/১১ দায়ী। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের যুবলীগে আনার চেষ্টা চলছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, সংগঠনের সভপতিমণ্ডলীর সদস্য হারুন-অর-রশিদ এবং আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু প্রমুখ। মির্জা আজম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কেন্দ্র যাদের বেছে নেবে তারাই নেতৃত্বে আসবে। তবে যারা ত্যাগী, দলের দুর্দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে সহযোগিতা করেছেন এবং যারা দক্ষ ও মেধাবী তাদের মূল্যায়ন করা হবে। তিনি বলেন, গত কমিটিতে যারা পদ পেয়েছিল কিন্তু দলে কোন কাজ করেনি কিংবা পদ পেয়ে দেশের বাইরে চলে গেছেন, তারা এবার বাদ পড়বেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কাউন্সিলের শুভ সূচনা ঘটবে। দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। এরপর নৃত্য এবং গানের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৪০ বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে। শেখ হাসিনা কিভাবে কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ছেন তার বর্ণনা থাকবে এতে। মির্জা আজম বলেন, দেশের সাংগাঠনিক ৭৭টি জেলা এবং জেলা মর্যাদা সম্পন্ন ১৫টি বৈদেশিক শাখার সর্বমোট ২ হাজার ৬০১ জন কাউন্সিলর এবং প্রায় ৩০ হাজার ডেলিগেট কাউন্সিলে যোগ দেবেন। এছাড়া জাতীয় নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং ভ্রাতৃপ্রতিম যুব সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ ৭ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যুবদলসহ সমমনা সংসংগঠনগুলোকে। কাউন্সিল উপলক্ষে নবীন ও প্রবীণদের এক মিলন মেলায় পরিণত হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র। বিকাল ৪টায় যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপিত্বে দ্বিতীয় পর্বে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের সংশোধনীসমূহ গৃহীত হবে এবং নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে কাউন্সিল সমাপ্ত হবে। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ২৫শে জানুয়ারি পঞ্চম সম্মেলনে জাহাঙ্গীর কবির নানককে সংগঠনের চেয়ারম্যান এবং মির্জা আজমকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে নানককে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হলে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন ওমর ফারুক চৌধুরী। জাতীয় এ কংগ্রেসকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন যুবলীগ নেতাকর্মীরা। চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন এক ডজনের বেশি নেতা। তবে যুবলীগের শীর্ষ দুটি পদ-চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই শেষ কথা। অন্য পদগুলোতে সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের পছন্দ, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সুপারিশ ও আঞ্চলিকতাসহ নানান বিষয় বিবেচনায় আসে বলে জানা গেছে।