ঢাকা, ১৭ মার্চ: বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলনকৃত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। গত বছরের আগস্টে বাপেক্স সুন্দলপুরে গ্যাসের সন্ধান পায় ।
পেট্রোবাংলা বলছে, এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হবে। তবে চট্টগ্রামের শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিকরা বলছেন, চাহিদা মেটানোর জন্য তাদের আরো অনেক বেশী গ্যাসের প্রয়োজন।
২০১১ সালের ১৭ই আগষ্ট নোয়াখালীর সুন্দলপুরে প্রায় ৮ মাস অনুসন্ধানের পর বাপেক্স একটি কূপে গ্যাসের সন্ধান পায়। এই কূপের গ্যাস শনিবার থেকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা।
পেট্রোবাংলা বলছে, খননকৃত এই কূপটি থেকে তারা ধারণা করছেন এখানে ৪২ থেকে ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রয়েছে। তবে এর পরিমান আরো বাড়তে পারে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর বলছিলেন, খননকৃত কূপ থেকে দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে এবং এটি সরবরাহ করা হবে চট্টগ্রামে। মনসুর বলেন, “এর ফলে চট্টগ্রামের যে গ্যাসের সমস্যা তা কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।”
চট্টগ্রামে শিল্পকারখানা মালিকেরা দীর্ঘদিন যাবত অভিযোগ করে আসছিলেন গ্যাস সংকটের কারণে চট্টগ্রামের অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তারা বলছেন যেসব শিল্পকারখানা গ্যাসে চলছে তারাও পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস পাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মুর্শাদ মুরাদ ইবরাহিম বলছিলেন, চট্টগ্রামে চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ গ্যাসই তারা পাচ্ছেন না। নতুন গ্যাস সরবরাহ করা হলেও অল্প কয়েকটি প্রতিষ্ঠানই এর একটি বড় অংশ ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের বড় দুটি সার কারখানা সিইউএফএল এবং কাফকো জাতীয় গ্রিডের গ্যাসের একটি বড় অংশ ব্যবহার করে এবং চারটি বিদ্যুৎ প্রকল্পও এই লাইন থেকেই গ্যাস ব্যবহার করে। আমাদের সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ করার জন্য চ্ট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ আরো দুই-তৃতীয়াংশ বাড়ানো প্রয়োজন।”
চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা যে অনেক বেশি পেট্রো্বাংলা চেয়ারম্যান হোসেন মনসুরও তা স্বীকার করলেন। তবে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর জন্য আরো কিছু প্রকল্প তাদের চলছে এবং অল্প কিছুদিনে মধ্যেই চট্টগ্রামে আরো গ্যাস সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, “আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সাঙ্গু থেকে সান্টোসের মাধ্যমে আমরা গ্যাস সরবরাহ করবো। আর আগামী তিন-চারদিন পরেই আমরা সালদা নদীর কূপ থেকে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করবো। এই গ্যাস চট্টগ্রামের দিকে যাবে।”
পেট্রোবাংলার হিসেবে বাংলাদেশে বর্তমানে আড়াই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে পেট্রোবাংলা সরবরাহ করছে প্রায় দুই হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।
বাংলাদেশে বর্তমানে ২৪টি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে যার মধ্যে ১৯টি থেকে গ্যাস উত্তোলন চলছে এবং আরো তিনটি স্থানে গ্যাসের জন্য অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি।