বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের অপসারণ করার জন্য আগামী রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। এ সময়ের মধ্যে তাদের অপসারণ করা না হলে শিক্ষকেরা গণপদত্যাগ করবেন। শিক্ষকেরা পদত্যাগপত্রে সই করে রেখেছেন। ওই দিনের মধ্যে (রোববার) উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের অপসারণ না হলে তারা বুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।
সোমবার সন্ধ্যায় বুয়েট শিক্ষক সমিতির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া শিক্ষকেরা লাগাতার কর্মসূচির পরিবর্তে মঙ্গলবার থেকে বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা করবেন।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বুয়েটের সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, সাবেক উপাচার্য ও কয়েকজন কৃতী শিক্ষার্থীকে নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষ তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘বুয়েট সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ডাকা বৈঠকে আমরা সবার মতামত নিয়েছি। এখন এগুলো রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত জানিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ভিসি ও প্রো-ভিসির বিরুদ্ধে ১৬ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বুয়েটের শিক্ষক সমিতি গত ৭ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের দাবি বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস দিলে শিক্ষক সমিতি তাদের আন্দোলন এক মাসের জন্য স্থগিত করে। তবে দাবি পূরণ না হওয়ায় গত ৭ জুলাই থেকে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা কর্মবিরতি পালন করছিলেন শিক্ষকরা। এ অবস্থায় গত ১০ জুলাই মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে বুয়েট বন্ধ করে দেয়া হয়। পরদিন সকাল থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী একত্রিত হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে।
একই দিন দুপুরে বুয়েটের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ জন নির্বাচিত ডিন, তিনজন পরিচালক এবং ১৭ জন বিভাগীয় প্রধান নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে গত বুধবার রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়। সভায় ভিসির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়। আন্দোলনরত শিক্ষকরা সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সর্বশেষ গত শনিবার আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনারের সামনে থেকে বুয়েটের ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন।