ঢাকা, ২৭ জুলাই: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে দেশের মানুষ সংশয়ে আছে। নির্বাচন কার অধীনে এবং কীভাবে হবে তা নিয়েও চরম অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে এ নিয়ে মানুষ চরম অন্ধকারের মধ্যে নিমজ্জিত।”
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘চলমান রাজনৈতিক সংকট: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে ‘রাজনৈতিক সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’।
আকবর আলি বলেন, “আগামী নির্বাচনের বিষয়ে সরকার যে পথে হাঁটছে, তাতে নির্বাচন হবে কী-না তা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন হলেও প্রধান বিরোধী দল এ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল ছাড়া কোনো নির্বাচন দেশ ও বিদেশের মাঠিতে গ্রহণযোগ্য হবে না।”
তিনি বলেন, “ভারত, পাকিস্তানের সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা না থাকার পরেও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলে সংবিধান সংশোধন ছাড়াই রাষ্ট্রপতি একজন অনির্বাচিত নিরর্দলীয় ব্যক্তির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায় সরকার পদ্ধতি থাকায় নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তা পুর্নবহাল করাই সমুচিত।”
সাবেক এই সচিব বলেন, “সংকট উত্তরণের জন্য দরকার সংকটের অস্তিত্ব শিকার করা। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো এ কাজটি করতে চান না। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরা সব সময় এগিয়ে থাকেন। রাজনৈতিক সদিচ্ছাই এ সংকট উত্তরণ করতে পারে।”
আকবর আলি বলেন, “আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক মাঠ গরম এবং উত্তেজনা বাড়বে। সুতরাং এই সংকট নিরসনে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে আবারো দেশের গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে। সাধারণ মানুষ হারাবে তাদের ভোটের অধিকার।”
গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে শুধু মাত্র পেশাদার রাজনীতিবিদের ওপর ভরসা করলেই হবে না। দেশের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হলে তা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রতিষ্ঠিত এই পদ্ধতি বাদ দিয়ে নির্বাচন করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা আবার পাকাপোক্ত করা।’’
সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা লায়ন ইব্রাহিম ভূঁইয়া, লায়ন আব্দুল মতিন প্রধান, লায়ন গনি সিরাজ বাবলু ও সাংবাদিক মাহবুব আলম।