বার্তা ৭১ ডট কমঃ পদ্মা সেতুর ব্যাপারে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেও এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি বিশ্বব্যাংক। বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও বিশ্বব্যাংক এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়নি। বিবিসি ওয়ার্ল্ডের হার্ডটককে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেছেন। আজ সোমবার সাক্ষাত্কারটি প্রচারিত হয়।
লন্ডন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে পাঁচ দিনের যুক্তরাজ্য সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে এই সাক্ষাত্কার দেন। সাক্ষাত্কারে পদ্মা সেতু দুর্নীতি ও মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ, গ্রামীণ ব্যাংক ও এর প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মানবাধিকার, র্যাবের কর্মকাণ্ড, সংবিধান সংশোধন, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গসহ বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি বাতিল প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেও এ ব্যাপারে কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি। তাদের কাছে এ জন্য বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য-প্রমাণ দিতে প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিশ্বব্যাংককে তাগাদা দিয়েছেন বলে জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই তদন্ত নির্বিঘ্ন করতে সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেছেন। তাঁর এই পদত্যাগকে প্রধানমন্ত্রী ‘সাহসী’ সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘রক্তচোষা’ বলেছেন কেন—বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এ কথা বলেননি।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, নিয়ম অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধানকে ৬০ বছর বয়সে সরে যেতে হয়। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বয়স ৭০-৭১ বছর। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে ৩০-৪০ শতাংশ সুদ নেয় বলে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই কার্যক্রমের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন করতে পারেননি। বরং তাঁর সরকারই (মহাজোট সরকার) ১০ শতাংশ দারিদ্র্য কমিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে যে প্রশ্ন তুলেছে, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার র্যাব প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমান সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের চেষ্টা করছে। তবে রাতারাতি এটা বন্ধ করা যাবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পথ বন্ধ করতে সরকার সংবিধান সংশোধন করেছে। বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী মন্দার পরও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এ দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা, অধিকারের বিষয়ে তাঁর সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।