বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তা আদায়ে ঈদের পর জোরদার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সরকারের কোনো প্রস্তাবই বিএনপি গ্রহণ করবে না।
বৃহস্পতিবার এক ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সরকারকে পরিষ্কার বলে দিতে চাই, কোনো ধানাই-পানাই না করে সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নির্দলীয় সরকার ছাড়া অন্য কোনো প্রস্তাব আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।”
নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালে ঈদের পর আন্দোলন জোরদারের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “এই আন্দোলনে সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহণ করতে হবে। এই সরকারকে হটাতে হলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।”
লন্ডনে বিবিসি বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালে বিরোধী দলের সমন্বয়ে সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন। এজন্য বিএনপিকে সংসদে এসে প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
গত বছর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়, ফলে আগামী নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হবে।
আওয়ামী লীগ অনির্বাচিত কারো কাছে ক্ষমতা ছাড়ার পক্ষপাতি না হলেও বিএনপি এর বিপরীত অবস্থান নিয়েছে।
স্থানীয় সরকারেরর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের জন্য আয়োজিত ওই ইফতার অনুষ্ঠানে বিরোধীদলীয় নেতা সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের সমালোচনা করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, “স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা যেভাবে কাজ করতে পারছে না, তেমনি আমরাও জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে ভূমিকা রাখতে পারছি না। ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে কোনো কাজ করতে দেয় না। সংসদে তারা আমাদের কথা বলতেও দেয় না।”
জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে এই ইফতার অনুষ্ঠানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, সারাদেশের উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর আড়াই হাজারের বেশি প্রতিনিধি অংশ নেন।
ইফতার শুরুর আগে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা, চট্টগ্রামের মেয়র এম মনজুর আলম, বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক আবদুল হাই, সাবেক স্থানীয় সরকার উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, উপজেলা চেয়ারম্যান পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আতাউর রহমান আতা, পৌরসভা মেয়র সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম আল রাজী, ইউনিয়ন পরিষদ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম প্রমুখ।