আগামী বাজেটে সার্বিকভাবে ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে’ বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি সুবিধা ধনী-গরীব সমানভাবে পায়’।
শুক্রবার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত কৃষি বাজেট সংক্রান্ত এক প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় চ্যানেল আই-এর কৃষি কার্যক্রম ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে কৃষি ও কৃষকের জন্য করণীয় ৫৫ দফা সুপারিশমালা অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। চ্যানেল আই’র বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ এসব সুপারিশমালা তুলে ধরেন।
উপস্থাপিত সুপারিশমালার মধ্যে কৃষি খাত সম্পর্কিত ১৮ দফা, পোল্ট্রি খাত সম্পর্কিত ১৪ দফা, মৎস্য খাত সম্পর্কিত ১২ দফা ও দুগ্ধ খাত সম্পর্কিত ১১ দফা সুপারিশ রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি বাজেটের পুরোটাই ভর্তুকি। দু’দিকে এ ভর্তুকি দিতে হয়। একটা হচ্ছে কৃষিতে, আর অন্যটি খাদ্যে।’
চলতি অর্থবছরে কৃষিখাতে যে পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে এটাকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে কৃষি খাতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এর আকার অনেক বেড়ে গেছে। এবারের মত ভর্তুকি আগামী বাজেটে দেওয়া সম্ভব হবে না।’ তবে আগামী বাজেটে পোল্ট্রি শিল্পকে সহায়তার জন্য একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
অন্যান্যের মধ্যে ভুট্টা উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী।
সারে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়াসহ অন্যান্য সারের মূল্য বাড়লেও সরকার ভর্তুকি বাড়িয়েছে, কিন্তু দাম বাড়ায়নি। জ্বালানির মূল্যের সঙ্গে সারের মূল্যের সম্পর্ক রয়েছে। এবার কতটা ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে, সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে সারে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়ে এবার একটা কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। বিদ্যুৎ ও ডিজেলে ভর্তুকি সরাসরি কৃষকের হাতে পৌঁছে। কারণ এখানে কার্ড সিস্টেম চালু রয়েছে। সারের ক্ষেত্রে এটা নেই।’
কৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি পণ্যের বিক্রয় মূল্য অবশ্যই উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে বেশি হতে হবে। তবে আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে।’
শাইখ সিরাজ বলেন, ‘কৃষি খাতে ভর্তুকি এটা কিন্তু কৃষকের জন্য করুণা করা নয়। তিনি বলেন, এ ভর্তুকিটুকু না দিলে সরকারকে অধিক দাম দিয়ে বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে।’
অন্যান্য প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিদ্যুতের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের জন্য নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেটা কবে কার্যকর করা সম্ভব হবে জানি না।’
জেলা বাজেট ও একীভূত বাজেট পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এতে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ে।’ দেশের শিল্পখাতের জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন যেসব প্রস্তাব দেয় সেটাকে ‘এলিট শ্রেণীর বাজেট’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।