টিআইবির কাছে সংসদ অবমাননার কারণ জানতে চাওয়া হবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ প্রতিবেদনের তথ্যউপাত্ত দুর্বল উল্লেখ করে জার্মানির বার্লিনে সংস্থাটির সদরদফতরে চিঠি পাঠানো হবে। পাশাপাশি বলবো প্রতিবেদনটি আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। তবে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে সে ব্যাপারে স্পিকারই সিদ্ধান্ত নেবেন।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বেগম রেহেনা আক্তার রানুর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা জানান।
টিআইবির প্রতিবেদনকে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ ও ‘অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে ‘বস্তুনিষ্ঠ’ প্রতিবেদন তৈরির জন্য বলা হবে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
এর আগে বিকেল ৪টায় ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, বর্তমান মহাজোট সরকারের শাসনামলে কোনো সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। তবে বিভিন্ন সময়ে খুন হয়েছে ৮ সাংবাদিক।
মন্ত্রী জানান, মহাজোটের আমলে নিহত সাংবাদিকরা হলেন মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের গোলাম মোস্তফা সরোয়ার সাগর, এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনী, যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক গ্রামের কাগজের শার্শা উপজেলার কাশিমপুর প্রতিনিধি জামাল উদ্দীন, এনটিভির সাংবাদিক আতিকুল ইসলাম, দৈনিক জনতা পত্রিকার ফরহাদ খাঁ, এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান শফিকুল ইসলাম মিঠু, সিলেটের ফতেহ ওসমানী ও দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার সাংবাদিক ফরিদুর রহমান রঞ্জু।
শাহরিয়ার আলমের সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, সমাজের বিভিন্ন মহল ও গোষ্ঠীর মধ্যে দুর্নীতিবাজ থাকা সত্ত্বেও তাদের বাইরে রেখে কেবল রাজনীতিবিদদের ঢালাওভাবে দুর্নীতিবাজ বলা একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। টিআইবিও সেই ফ্যাশন অনুসরণ করে সংসদ সদস্যদের নিয়ে ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা সংসদ সদস্যদের হেয় এবং এই মহান সংসদকে খাটো করেছে।
ইনু বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন, ঠিক তখনই টিআইবি এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাদের রিপোর্টে এমন কোন তথ্য নেই যার আলোকে সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়। তারা পূর্ব ধারণার একটি দুর্বল প্রতিবেদন দেশবাসীর সামনে হাজির করেছে। রিপোর্ট দেখে আমি হতাশ হয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, দেশে ৩২০টি নিবন্ধিত পত্রিকা থাকা সত্ত্বেও মাত্র ৫টি পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তারা গবেষণা করেছে। যেখানে দেশের সর্বাধিক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন ও আমাদের সময়’ পত্রিকা নেই। তারা কেন, কোন মাপকাঠিতে ওই পাঁচটি পত্রিকাকে তথ্যের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে। টিআইবি ‘সচেতন নাগরিক’ এর কথা বলেছে কিন্তু ওই সচেতন নাগরিকের কোন সংজ্ঞা তারা দিতে পারেনি। তথাকথিত সতেচন নাগরিকের কথা বলে তারা দেশের সাধারণ জনগণকে অপমান করেছে। আমি এর নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, সচেতন নাগরিক কমিটি, ‘সনাক’ নামে টিআইবির একটি নিজস্ব সংগঠন আছে। যেসব জেলায় তাদের এ সনাকের কমিটি আছে সেসব জেলাগুলোতেই তারা এই জরিপ পরিচালনা করেছে।
১৪৯ সংসদ সদসদের নিয়ে টিআইবির এই রিপোর্ট প্রকাশের পরদিন সকল পত্রিকা ফলাওভাবে প্রকাশ করেছে যে ৯৭ ভাগ সংসদ সদস্য দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু টিআইবি ওই সংবাদের প্রতিবাদ জানায়নি। জনমনে বিভ্রান্ত তৈরি হোক তারা এটাই চেয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
ফজিলাতুননেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে ইনু বলেন, টিআইবির বিষয়ে সরকারের কোনো ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সঠিক উপাত্তের ভিত্তিতে গবেষকরা কাজ করবেন এই আহ্বান জানাচ্ছি।